মহাপ্লাবনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত!

রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২০ | ২:২৬ অপরাহ্ণ

মহাপ্লাবনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত!
apps

বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। যার ফলে গলছে পর্বতশীর্ষে জমাট বাঁধা বরফ। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয়ের হিমবাহগুলো গত তিন দশক ধরেই গলছে আশঙ্কাজনক হারে। এই হিমালয় অঞ্চলের ৫ হাজার হ্রদ ভেসে ভয়াল প্লাবনের আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস (পিএনএএস বা পিনাস)’।
এই দশকেই হিমালয় পর্বতমালা থেকে বেরিয়ে আসা নদীর অববাহিকা ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে পারে। এতে ভারতের পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তারা। গ্রাম ও জনপদগুলো বন্যায় ভেসে যাওয়ার আশঙ্কার সেই সংবাদটি গতকাল ৪ জানুয়ারি, শনিবার প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম।
ভারতের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যান্টার্কটিক অ্যান্ড ওশান রিসার্চের (এনসিএওআর)’ অধিকর্তা মুথালাগু রবিচন্দ্রন সেই প্রতিবেদনের সূত্রে জানান, পরিবেশ দূষণের ফলে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে হিমালয়ের হিমবাহগুলোর বরফ দ্রুত হারে গলছে। হিমবাহগুলোর সৃষ্টিতত্ত্বসংক্রান্ত সব মডেল নিয়েই কম্পিউটারে সিমুলেশন করে এবং বিভিন্ন উপগ্রহের পাঠানো তথ্যের সাহায্যে গবেষকরা এ পূর্বাভাস দিয়েছেন।
হিমালয়ের হিমবাহগুলির বরফ গলে যাওয়ার ফলে শুধু সিকিম হিমালয়েই ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে ৮৫টি সুবিশাল হ্রদের জন্ম হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গবেষকদের অন্যতম জার্মানির পোস্টড্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক জর্জ ভেহ্ ও অলিভার কোরুপ এ বিষয়ে ই-মেইলে জানিয়েছেন, হিমালয় পর্বতমালার অন্যান্য অংশের চেয়ে সিকিম হিমালয়-সহ গোটা পূর্ব হিমালয়ে এই ভয়াল বন্যার আশঙ্কা অন্তত ৩ গুণ বেশি।
পরিবেশ দূষণের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে গত দু-তিন দশক ধরেই দ্রুত হারে গলতে শুরু করেছে হিমালয় পর্বতমালার হিমবাহগুলি। হিমবাহের বরফ গলা জলের স্রোতই আশপাশের মাটি ও নুড়ি, পাথরগুলিকে ভাসিয়ে নিয়ে এসে হিমালয়ের কোলে ওই প্রাকৃতিক হ্রদগুলি তৈরি করেছে।
সম্প্রতি হিমবাহগুলি এত বেশি সংখ্যায় এত দ্রুত গলতে শুরু করেছে যে সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলি বিশাল আকারে রূপ নিচ্ছে। শুধুই আয়তনেই নয়, সে-সব প্রাকৃতিক হ্রদগুলি বেশ গভীরও!
আগের একটি গবেষণা জানিয়েছিল, এই দশকেই হিমালয়ের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ হিমবাহের বরফের বেশির ভাগটাই গলে যাবে।
গবেষকরা দেখেন, বরফ গলা পানির তোড়ে হ্রদগুলোর পানিকে ঘিরে থাকা মাটি ও নুড়ি পাথরের দেয়ালগুলো ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘মোরেন’ বলা হয়।

Development by: webnewsdesign.com