সেতু আছে, নেই সংযোগ সড়ক : দুর্ভোগ

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৮:২৩ অপরাহ্ণ

সেতু আছে, নেই সংযোগ সড়ক : দুর্ভোগ
apps

সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজ আসছে না চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু। বছর চারেক আগে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুর ধলাই সেতুটি নির্মাণ করে এলজিইডি। কিন্তু সংযোগ সড়ক করেনি। ফলে সেতু দিয়ে মানুষ কোনও রকমে পার হলেও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। মানুষের চলাচল সেভাবে না থাকায় কৃষকরা সেতুটি ধান শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন। আর বর্ষা মৌসুম একেবারেই চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগ হয় এই সেতু দিয়ে। দুই ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ বাস। সংযোগ সড়ক না থাকায় ২০ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরতে হচ্ছে তাদের।

শুকুর উল্লাহগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সুরমা বেগম, ছাদিকুর রহমান, জয়নাল আবেদিন, মোহামদ্দিন, আব্দুল কাদির ও আমজদ আলী জানান,সেতু উদ্বোধনের সময় দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন স্থানীয় এমপি। প্রায় ৪ বছর পার হলেও সেই সড়ক আর নির্মিত হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই ইউনিয়নে বাসিন্দারা। বিশেষ করে প্রসূতিদের হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
কৃষক আব্দুল মান্নান, তমিজ উদ্দিন ও আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের এলাকার ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজ করেন। মৌসুমী ফসল উপজেলা সদরসহ জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা বেশি ঘুরতে হয়। ফলে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। এতে করে ফসল উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে অনেক কৃষকই মৌসুমী ফসল উৎপাদন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এছাড়া মাধবপুর লেক ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি বিজড়িত এলাকা দেখতে বেশি পথ ঘুরে আসতে হচ্ছে।
কলেজ শিক্ষার্থী পারভীন বেগম, ছাদিয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে কলেজে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তাটি নির্জন হওয়ায় ঝুঁকি যাতায়াত করতে হয় তাদের।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ জানান, গত দু’বার সেতুটির একপাশে সংযোগ সড়কে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে টাকা খরচ করে মাটি ভরাট করেছি। অতিবৃষ্টির কারণে মাটি সরে গিয়ে সেতুর দুই মাথার এই অবস্থা হয়েছে। তাছাড়া সেতুর সংযোগ সড়কের বেহাল অবস্থা। এলজিইডি অফিসের লোকজন এসে রাস্তাটি মেপে নিয়ে গেছে। কিন্তু গত ৪ বছরেও কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি।
মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, ‘সড়ক ও সেতুর বেহাল অবস্থা থাকায় এলাকাবাসীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সড়ক নির্মাণ করা হলে দুই ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও একধাপ এগিয়ে যেত।’
এলজিইডি কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। রাস্তাটি সরু হওয়ায় এবং স্থানীয়রা জমি না দেওয়ায় আমরা সড়কের কাজ করতে পারছি না।’

Development by: webnewsdesign.com