মৃত্যুকালে রাসূল (সা.)যে কথাটি বারবার বলেছিলেন আমাদের সকলের জানা উচিত!

বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩ | ৫:২৩ অপরাহ্ণ

মৃত্যুকালে রাসূল (সা.)যে কথাটি বারবার বলেছিলেন আমাদের সকলের জানা উচিত!
apps

হযরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনের শেষ মূহুর্ত চলছে। ‘ঠিক সে সময় একজন লোক এসে ‘সালাম’ জানিয়ে বললেন, আমি কি ভিতরে আসতে পারি। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) বললেন, দুঃখিত আমার পিতা খুবই অসুস্থ। একথা বলে ফাতিমা (রাঃ) দরজা বন্ধ করে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- কাছে গেলেন। হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কে সেই লোক? ফাতিমা বললেন, এই প্রথম আমি তাকে দেখেছি। আমি তাকে চিনি না।

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- বললেন শুনো ফাতিমা, সে হচ্ছে আমাদের এই ছোট্ট জীবনের অবসানকারী ফেরেশতা আজরাইল। এটা শুনে হযরত ফাতিমার অবস্থা তখন ক্রন্দনরত বোবার মতো হয়ে গিয়েছে। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- বললেন, হে জিবরাঈল আমার উম্মতের কি হবে? আমার উম্মতের নাজাতের কি হবে ? জিবরাঈল (আঃ) বললেন, হে রাসুল আপনি চিন্তা করবেন না, আল্লাহ ওয়াদা করেছেন আপনার উম্মতের নাজাতের জন্যে।

মৃত্যুর ফেরেশতা ধীরে ধীরে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- কাছে এলেন জান কবজ করার জন্যে। মালাকুল মউত হযরত আজরাইল আরো কাছে এসে ধীরে ধীরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- জান কবজ করতে থাকলেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জিব্রাইলকে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- বললেন ঘোঙানির সাথে, ওহ জিবরাঈল এটা কেমন বেদনাদায়ক জান কবজ করা। ফাতিমা (রাঃ) তার চোখ বন্ধ করে ফেললেন, আলী (রাঃ) তার দিকে উপুড় হয়ে বসলেন, জিবরাঈল তার মুখটা উল্টা দিকে ফিরিয়ে নিলেন।

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে জিবরাঈল তুমি মুখটা উল্টা দিকে ঘুরালে কেন, আমার প্রতি তুমি বিরক্ত? জিবরাঈল বললেন, হে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- সাকারাতুল মউতের অবস্থায় আমি আপনাকে কিভাবে দেখে সহ্য করতে পারি!

ভয়াবহ ব্যাথায় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ছোট্ট একটা গোঙানি দিলেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- বললেন, হে আল্লাহ সাকারাতুল মউতটা (জান কবজের সময়) যতই ভয়াবহ হোক, সমস্যা নেই, আমাকে সকল ব্যথা দাও আমি বরণ করবো, কিন্তু আমার উম্মাতকে ব্যথা দিওনা। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- শরীরটা ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো। তার পা, বুক কিছুই নড়ছে না এখন আর। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর- চোখের পানির সাথে তার ঠোঁটটা কম্পিত ছিলো, তিনি কিছু বলবেন মনে হয়।

হযরত আলী (রাঃ) তার কানটা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- মুখের কাছে নিয়ে গেলো। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নামাজ কায়েম করো এবং তোমাদের মাঝে থাকা দূর্বলদের যত্ন নিও। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- ঘরের বাইরে চলছে কান্নার আওয়াজ, সাহাবীরা একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে উচ্চস্বরে কান্নারত। হযরত আলী (রাঃ) আবার তার কানটা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের- মুখের কাছে ধরলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের -চোখ ভেজা অবস্থায় বলতে থাকলেন, ইয়া উম্মাতি, ইয়া উম্মাতি, হে আমার উম্মতেরা নামাজ, নামাজ, নামাজ, মহান আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মোহাম্মদীর সকল উম্মতকে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কথাটি বারবার বলেছিলেন সেই কথাটির উপর আমল করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন। লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।

Development by: webnewsdesign.com