ঢাকা সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রনে গতবছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই : প্রধান স্বাস্থ কর্মকর্তা

বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৫:৩১ অপরাহ্ণ

ঢাকা সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রনে গতবছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই : প্রধান স্বাস্থ কর্মকর্তা
apps

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেছেন, এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এখন জানি কোথায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে, কোথায় এদের ঘনত্ব বেশি, কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয় ইত্যাদি। তাই এসব তথ্য-উপাত্ত কাজে লাগিয়ে আমরা বছরের শুরু থেকেই পুরোদমে কাজে নেমেছি।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ডিএনসিসির মহাখালী আঞ্চলিক কার্যালয় সংলগ্ন মার্কেটে এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে এক সচেতনতামূলক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সাল বিভিন্নভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এ বছরকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষ যাতে এডিস মশার উপদ্রব ছাড়াই বছরব্যাপী এ উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারে সেজন্য আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।

সভার শুরুতে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল, বংশবিস্তার, রোগ-জীবাণু বহন, মানুষকে আক্রান্ত করাসহ বিশ্বে ডেঙ্গু রোগের সামগ্রিক চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সিডিসির (সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশ) সার্ভিলেন্স মেডিক্যাল অফিসার ডা. খাদিজা সুলতানা। এতে দেখানো হয়, ১২৬টি দেশে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে ২৫০ কোটির অধিক মানুষ, অর্থাৎ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। এসব দেশে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে।

 

 

 

 

 

 

সিডিসির এ উপস্থাপনায় আরও বলা হয়, গত আগস্ট মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। সারা দেশে এ এক মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড করা হয়, যার অধিকাংশই ছিল রাজধানীতে। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর-এ তিন মাসে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছে, এ বছরও একই সময়ে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে।

অ্যাডভোকেসি সভায় এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির বিভিন্ন কার্যক্রম পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার। তিনি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ২০১৯ সালে ডিএনসিসির সামগ্রিক কার্যক্রম এবং ২০২০ সালে চলমান ও আসন্ন এডিস মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

লে. কর্নেল সারওয়ার বলেন, গত বছর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যায়। গত বছর শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রতিবেশীর বাসা-বাড়িও পরিদর্শন করে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করেছে। আমরা এবারও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই কার্যক্রম প্রত্যাশা করছি। মশক নিধন কার্যক্রম আরও বেগবান করতে এরই মধ্যে ২০০টি ফগার মেশিন, ২৩৮টি পালস ফগমেশিন, ১৫০টি হার্টসন হস্তচালিত মেশিন, ৩৪০টি প্লাস্টিক হস্তচালিত মেশিন, ২টি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন, ১০টি মোটরসাইকেল ফগার ও হস্তচালিত মেশিন, ২০টি মিস্ট ব্লোয়ার/পাওয়ার স্প্রে মেশিন ক্রয়পূর্বক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

ডিএনসিসির অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যদের মধ্যে ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিয়াকত আলী, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সফিউল্লাহ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল্লাহ আল মঞ্জুর, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৈমুর রেজা, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৮-এর কাউন্সিলর মিতু আক্তার, বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও সোসাইটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, মসজিদের ইমাম সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

Development by: webnewsdesign.com