বোনের মৃত্যু শোক ভুলে বিশ্বজয়ের নায়ক :আকবর

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১:৪৭ অপরাহ্ণ

বোনের মৃত্যু শোক ভুলে বিশ্বজয়ের নায়ক :আকবর
apps

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক আকবর আলী।বিশ্বকাপ ফাইনাল মানেই ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তার মানসিকতা। সেখানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক আকবর আলী যা করে দেখিয়েছেন, তা বাস্তবতাকেও হার মানায়! বোনের মৃত্যু শোক ভুলে দলকে আগলে রেখে একের পর এক ম্যাচ খেলে গেছেন যুব বিশ্বকাপে। সেই আকবরের ব্যাটেই বাংলাদেশের জয় ধরা দিয়েছে।

গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় ২১ জানুয়ারি। ওই দিন স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে দেয় আকবরের দল। টানা দুই জয়ে বাংলাদেশ পৌঁছায় কোয়ার্টার ফাইনালে। কিন্তু পরদিন ২২ জানুয়ারি তার জীবনে ঘটে যায় মর্মান্তিক এক ঘটনা। মারা যান আকবরের বোন। অথচ বোনের মৃত্যুর খবর তখনও জানতেন না তিনি। বিষয়টি তার কাছে গোপন রাখেন আকবরের পরিবার।

কেননা ২৪ তারিখ পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ওই ম্যাচ শেষেই দেশ থেকে বোনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় আকবরকে।যমজ সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেছেন আকবরের বড় বোন। অধিনায়ক আকবরের এমন খবরে পুরো যুব দলই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। ইনজুরির কারণে দেশে ফিরে আসা মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের দুইদিন আগে আপু মারা গেছে। কিন্তু আকবরের পরিবার তখনও তাকে বিষয়টি জানায়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বাসা থেকে ফোন আসে।

আমরা সবাই অনেক কান্নাকাটি করেছিলাম। তখন শোকাবহ একটা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল।’সতীর্থদের ভেঙে পড়া দেখে তখন আকবর নিজেই নিজেকে শক্ত করেছেন। কারণ তিনি যে অধিনায়ক, মৃত্যুঞ্জয় জানিয়েছেন, ‘আমাদের সবার মন খুব খারাপ ছিল। উনি আমাদের বলেছিলেন, এগুলো নিয়ে না ভাবতে, বিশ্বকাপ জেতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এইসব নিয়ে ভাবার সময় নেই।’অনেক চাপা স্বভাবের এই আকবর আলী, ‘উনি নিজের মধ্যেই সব কিছু রেখে দিতে পছন্দ করেন। কাউকে কিছু বলেন না।

আমাদের নিষেধ করেছিল কিছু বলতে। উনি অন্যরকম। সব কষ্ট, চাপ নিজের মধ্যে রাখতে পছন্দ করেন।’অথচ এই শোককেই শক্তিতে পরিণত করে ইতিহাস গড়েছেন আকবর। দেশকে প্রথমবারের মতো এনে দিয়েছেন আইসিসির কোনো বিশ্বকাপ ইভেন্টের শিরোপা। তিনি নিজেকে আরও উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নায়কোচিত ইনিংস খেলে। মৃত্যুঞ্জয় তার নেতৃত্ব গুণে মুগ্ধ, ‘উনার মতো অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলা সত্যিই দারুণ ব্যাপার। পুরো দলকে যেভাবে উজ্জ্বীবিত করেছেন, সেটা দারুণ। এমন শোক মাথায় রেখে ফাইনালে এভাবে খেলা, কারও পক্ষেই হয়তো সম্ভব নয়। আমরা সত্যিই বিস্মিত। তাকে স্যালুট।’যুব দলের ট্রেনার মুজাদ্দেদ সানি জানালেন, মৃত্যুর খবর তাদের কাছে আগেই এসেছিল। কিন্তু পরিবারের চাপে সেই কথা আকবরকে জানানো হয়নি। কারণ সামনেই যে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, ‘ওর পরিবার আমাদের জানালেও ওকে জানাতে নিষেধ করেছিল।

যখন জানলো খুব অভিমান করেছিল। ও খুব চাপা স্বভাবের। তার পরও কেঁদেছে। নিজেকে সামলে নিয়ে সবাইকে ম্যাচে ফোকাস রাখতে বলেছে। সত্যিই ভিন গ্রহের মানুষ আকবর।’

Development by: webnewsdesign.com