পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা সদরে যাতায়াতে নৌকা একমাত্র বাহন কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের। উপজেলার মাড়েয়া হাট থেকে উত্তর দিকে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট। নদী পার হলেই শুরু বড়শশী ইউনিয়ন আর কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন।
এ দু’টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। এতে সেতু না থাকায় বোদা উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে বড়শশী ও কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন।
এই দুটি ইউনিয়নের মানুষকে আউলিয়া ঘাটে ডিঙি নৌকা কিংবা বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন যেতে হয় বোদা উপজেলা সদরে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও এভাবেই পারাপার হতে হয়। আর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কিংবা উপজেলা প্রশাসনের কোনো গাড়ি বিশেষ বিশেষ কাজে ওই এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন হলে পঞ্চগড় জেলা শহর দিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। দীর্ঘদিনের দাবি আর এলজিইডি কর্তৃপক্ষের দেওয়া চাহিদা অনুযায়ী বারবার মাপজোকেরও পরও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগ কমছে না ওই এলাকার বসিন্দাদের।
স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন,‘ আউলিয়ার ঘাট দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করি। আমার চাকরি প্রায় শেষের দিকে আর মনে হয় সেতুর মুখ দেখা হবে না। স্বাধীনতার পর একটি সেতুর আশা থাকলেও এই দুই ইউনিয়নবাসীর কাছে তা অধারাই রয়ে গেছে।’
বড়শশী ইউ’পি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন এবং কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আলাল জানান, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৮টি ইউনিয়ন করতোয়া নদীর ওপারে। আর আমাদের ২টি ইউনিয়ন নদীর এপারে। আউলিয়া ঘাটে সেতু হলে এলাকার বাসিন্দাদের ব্যবসা বাণিজ্যসহ স্কুল কলেজের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের আর অসুবিধা থাকবে না। আমরা মাননীয় রেলপথ মন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ সংসদ সদস্য এ্যাড. নূরুল ইসলাম সুজনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. শাহিদুল ইসলাম জানান, কালিয়াগঞ্জ ও বড়শশী ইউনিয়নের মানুষের উপজেলা সদরে আসতে একটি সেতুর খুবই প্রয়োজন। আমরা রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে একটি সেতুর জন্য মন্ত্রণালয়ের অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে সেতুর অনুমোদন পেলে তা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
উল্লেখ্য, করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শন করেছেন। বিশেষজ্ঞ টিমের সদস্যরা হলেন- প্রফেসর ড. শাহজাহান মণ্ডল, প্রফেসর ড. সুজিত কুমার বালা, প্রফেসর ড. জিএম তরিকুল ইসলাম। আউলিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য তারা গত ২০১৮সালে ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি বিশেষজ্ঞ টিম আউলিয়ার ঘাট এলাকায় হাইড্রোমরফলোজি পানি এবং নদীর গতি পথের অবস্থান নির্ণয় ও সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করেন। বিশেষজ্ঞ দলটি প্রাথমিক পর্যায়ে সেতু নির্মাণের জন্য দুইটি সাইট সিলেকশন করেছেন। এর মধ্যে একটি বদেশ্বরী মন্দির থেকে সোজা পশ্চিমে, অপরটি বর্তমান আউলিয়া ঘাট এলাকায় ওয়াই ডিজাইনের।
Development by: webnewsdesign.com