নিরাপদ খাবার আদৌ আছে কি?

বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১:১৬ অপরাহ্ণ

নিরাপদ খাবার আদৌ আছে কি?
apps

খাদ্যে ভেজাল এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে ভেজালের ভিড়ে আসল চেনাই দায়। নিরাপদ খাবার আদৌ আছে কি- এমন প্রশ্ন রয়েছে মানুষজনের মধ্যে। খাদ্যে ভেজাল যে একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য রায় ভেজাল বন্ধে কার্যকর পদেেপর কোনো বিকল্প নেই।
খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হলেও এ বিষয়ে আইন প্রয়োগে তেমন কোন উদ্যোগ নেই। মাঝেমধ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। যৎসামান্য জরিমানা করা হয়। ব্যস, ওই পর্যন্তই। কিছুদিন পরই আবার শুরু হয় ভেজালের সমারোহ।
১৯৭৪ সালের বিশেষ মতা আইনে খাদ্যে ভেজাল দেয়া এবং ভেজাল খাদ্য বিক্রির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া ১৪ বছরের কারাদদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা প্রয়োগ করার কোন নজির নেই। অথচ খাদ্যে ভেজালের বিষয়টি এখন ওপেনসিক্রেট। খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যের মান ও বাজার নিয়ন্ত্রণে ৭টি মন্ত্রণালয় কাজ করে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখানে এক হ-য -ব -র- ল অবস্থা বিরাজমান। কার কোন্ দায়িত্ব, কে কিভাবে পালন করবে সেটা নিরূপণ করতেই সময় চলে যায়। আমাদের ভোক্তা অধিকার অধিদফতর আছে। দেশে ভোক্তা অধিকার আইনও আছে। কিন্তু কোথাও এই আইনের তেমন প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে তাদের তৎপরতা চোখে পড়লেও তা পর্যাপ্ত নয়।
খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও তা সন্তোষজনক নয়। আমাদের দেশে দূরারোগ্য রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ভেজালমিশ্রিত খাবার খাওয়া। খাদ্যে ভেজাল করা কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, এই ভয়ানক অপরাধীদের তেমন কোনো শাস্তিই হয় না। ভেজালের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে যে এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব এ ব্যাপারে সবাই একমত। কাজেই প্রয়োজনে নতুন আইন করে হলেও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জোরদার করতে হবে ভেজাল বন্ধে। খাদ্যে ভেজালের বিষয়টিকে হালকা করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।

Development by: webnewsdesign.com