হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের মেডিকেল সরঞ্জাম ক্রয়ে সাড়ে ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. আবু সুফিয়ানসহ আটজনকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের নির্দেশে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) টেন্ডার কমিটির বাজার দর যাচাই টিমের সদস্য ডা. জাহাঙ্গীর, ডা. শাহীন ভূঁইয়া, ডা. প্রাণকৃষ্ণ ও ডা. পংকজ কান্তি গোস্বামীকে এবং পরদিন সোমবার টেন্ডার কমিটির প্রধান ডা. আবু সুফিয়ান, সদস্য সচিব ও হবিগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. নাসিমা খানম ইভা, সদস্য ডা. হালিমা ও ডা. কদ্দুছকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য জানায়। এর আগে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শামসুল আলমকে প্রধান করে এর তদন্ত টিম গঠন করা হয়। ওই তদন্ত টিমের প্রধান চিঠির মাধ্যমে টেন্ডার কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আটজনকে তলব করেছেন।
সম্প্রতি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের বইপত্র ও মালামাল ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে প্রতিষ্ঠানটিতে। ভ্যাট ও আয়কর খাতে সরকারি কোষাগারে জমা হয় এক কোটি ৬১ লাখ টাকা ৯৭ হাজার ৭৪৮ টাকা। ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮১ হাজার ১০৯ টাকা মালামাল ক্রয় বাবদ ব্যয় দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে ওই মালামালের মূল্য পাঁচ কোটি টাকার বেশি নয়। বাকি টাকার পুরোটাই ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
সরবরাহ করা মালামালের মধ্যে ৬৭টি লেনেভো ল্যাপটপের (মডেল ১১০ কোর আই ফাইভ) মূল্য নেওয়া হয় ৯৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিটির মূল্য পড়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ ঢাকার কম্পিউটার সামগ্রী বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ফ্লোরায় একই মডেলের ল্যাপটপ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪২ হাজার টাকায়। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি মালামাল অতিরিক্ত মূল্যে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নির্ঝরা এন্টারপ্রাইজ এবং পুনম ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
১০৬ হটলাইনে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে দুর্নীতির ব্যাপারে অভিযোগের পর প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে গত ৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক তদন্তে নামে দুদক হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়। যা ছিল তাদের প্রথম পদক্ষেপ। পরবর্তীকালে বিষয়টি তদন্তের অনুমতি চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করা হয়। সেই অনুমতির অপেক্ষায় ছিল হবিগঞ্জ জেলা দুদক কার্যালয়।
Development by: webnewsdesign.com