পাকিস্তানের লাল মসজিদ দখলে নিয়েছেন মাওলানা আজিজ

শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৯:২৭ অপরাহ্ণ

পাকিস্তানের লাল মসজিদ দখলে নিয়েছেন মাওলানা আজিজ
apps

আবারো আলোচনায় পাকিস্তানের বহুল আলোচিত লাল মসজিদ ও এর বরখাস্ত করা খতিব মাওলানা আবদুল আজিজ। তিনি দুই সপ্তাহ আগে ওই মসজিদের দখল নিয়েছেন। দাবি করেছেন তিনিই মসজিদটির খতিব। রাজধানী ইসলামাবাদের প্রশাসন মসজিদটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে।

 

অন্যদিকে মাওলানা আবদুল আজিজ তার ছাত্রীদের নিয়ে মসজিদের ভিতরে অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে অন্যরকম এক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। এতে বলা হয়েছে, বিগত দুই সরকারের সময়কালের মতো আবারও বর্তমান সরকারের আমলে মাওলানা আবদুল আজিজ সরকারের নার্ভ পরীক্ষা করছেন।

তিনি রাষ্ট্র পরিচালিত এই মসজিদটি দখলে নিয়ে নিজেকে এর নেতা দাবি করেছেন। প্রশাসন যখন অন্যান্য ইস্যুতে ব্যস্ত, ইসলামাবাদ ক্যাপিটাল টেরিটোরি প্রশাসন এ বিষয়ে শৈথিল্য দেখিয়েছে, তখনই দু’সপ্তাহ আগে তিনি এই কাজ করেছেন।

মাওলানা আবদুল আজিজ ও প্রশাসন কেউ অবস্থানের পরিবর্তন করেন নি। ফলে সেখানে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ডন লিখেছে, সম্ভবত কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করতে গত শুক্রবারের বয়ান দিয়েছেন মাওলানা আজিজ। এ বিষয়ে তার সাবেক শিষ্য হাফিজ এহতেশাম আহমেদ আগেভাগেই সতর্কতা দিয়েছিলেন।

তিনি লাল মসজিদের শুহাদা ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র। তার সতর্কতা অবজ্ঞা করা হয়েছে। হাফিজ এহতেশাম বলেছেন, আগেভাগেই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে যে, লাল মসজিদের নায়েবে খতিবের সরকারি বাসভবন অবৈধভাবে দখলে নিয়েছেন হারুণ রশিদ। কিন্তু বিষয়টি আরো গুরুত্বর হয়ে ওঠে যখন জামিয়া হাফসা, জি-৭ এর প্রায় ১০০ ছাত্রী বৃহস্পতিবার রাতে এইচ-১১ এর সেমিনার হলের সিল করা ভবনে প্রবেশ করেন।

এর ফলে রাজধানীর প্রশাসনের কর্মকর্তারা লাল মসজিদে যান মাওলানা আজিকের সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সম মর্যাদার সিনিয়র কোনো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি সমঝোতামুলক আলোচনা করবেন।

এ বিষয়ে মসজিদের ভিতর থেকে মোবাইল ফোনে ডন’কে মাওলানা আজিজ বলেছেন, তারা সবাই আবারও একই ভুল করছেন। তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান দেখাচ্ছেন না এবং দেশে শরিয়া আইন জারির বিষয়ে অনীহা দেখাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, তারা এইচ-১১ এর জামিয়া হাফসা খালি করে দেয়ার জন্য ডেডলাইন দিয়েছেন আমাদেরকে। না হলে আবারও অপারেশন চালানোর হুমকি দিয়েছেন। এমনকি খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা ইসলামের স্বার্থে এর ভিতরেই অবস্থান নেবো।

কর্তৃপক্ষ এই ধর্মীয় নেতাকে লাল মসজিদ খালি করে দেয়ার সতর্কতা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে আছে। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে মুসল্লিদেরকে শুক্রবার মসজিদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে নামাজ আদায় করতে। এ সময় নামাজ আদায় করতে যাওয়া সব মুসল্লিকে পুলিশি ব্যারিকেডে তাদের সিএনআইসি জমা দিতে হয়েছে। নামাজ শেষে তা তাদেরকে ফেরত দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে শুক্রবার নিজের মতো করে উত্তেজনায় পূর্ণ বয়ান দেন মাওলানা আজিজ। এ সময় রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ইসলামের সত্যিকার অনুসারী নন এমনটা ঘোষণার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। মসজিদটি বাইরের সবার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে মাগরিব ও অন্যান্য নামাজের জন্য। মসজিদের ভিতরকার কোনো ব্যক্তি বাইরে এসে খাবার নিয়ে গেলে শুধু তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে।

একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার দু’বার সেখানে খাবার সরবরাহ দেয়া হয়েছে। ভবনের ছাদে নারীদের দেখা গেছে। তারা বাইরে এসে খাবার নিতে পারেন। আমরা বাইরের কাউকে ভিতরে অনুমতি দিচ্ছি না। কারণ, যেকেউ সেখানে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতে পারে।ক্যাপিটাল প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন দু’মাস আগে আমীর সিদ্দিকীকে বদলি করা হয়েছে।

 

তারপর লাল মসজিদে কোনো খতিব বা নায়েবে খতিব নেই। সমস্যা হলো আউকাফ ডিপার্টমেন্ট যে ধর্মীয় নেতার উল্লেখ করেছে তাকে হুমকি দিচ্ছেন এই মাওলানা ও তার গ্রুপ। তিনি আরো বলেন, মাওলানা আজিকের দাবি বাস্তবায়ন করা যাবে না, যেমনটি তিনি এই মসজিদের খতিব হতে চাইছেন আবার। তিনি জামিয়া হাফসা প্রতিষ্ঠার জন্য বিপুল পরিমাণ জমি ও ২৫ কোটি রুপি দাবি করেন। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সর্বোপরি আমরা আশা করি, তিনি দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে মসজিদটি থেকে বেরিয়ে যাবেন।

Development by: webnewsdesign.com