কামরানকে এবার কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চান নেতাকর্মীরা

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১০:১২ পূর্বাহ্ণ

কামরানকে এবার কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চান নেতাকর্মীরা
apps

সিলেট থেকে বিশেষ প্রতিনিধি
২০১১ সালের ২২ নভেম্বরের পর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয় । এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু পরবর্তীতে আর নতুন করে সম্মেলন বা কমিটি গঠন হয়নি। দীর্ঘ ৮ বছর পর গত ৫ ডিসেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন পুনরায় নির্ধারিত হয় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব। তবে কর্মী ও জনগণবান্ধব নেতা বদর আহমদ কামরানকে সভাপতি পদ দেয়া হয়নি।
এদিকে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন আগামীকাল শুক্রবার ও পরদিন শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে কামরান বড় পুরস্কারে পুরস্কৃত হবেন এমনটাই সিলেট মহনগর আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা।
এ বিষয়ে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বক্তব্য হচ্ছে- ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যে দায়িত্ব দেবেন, সে দায়িত্বই পালন করে যাবো ইনশাআল্লাহ।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন- সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সর্বজন শ্রদ্ধেয় বর্ণাঢ্য রাজনীতি ও নির্বাচনী ক্যারিয়ারের অধিকারী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এর বয়স এখন প্রায় ৬৬ বছর। ১৯৭৩ সালে ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচন দিয়ে শুরু রাজনৈতিক জীবন এরপর এখনও অবধি নির্বাচন ও রাজনীতিতে জড়িয়ে আছেন কামরান।
১৯৫৩ সালে জন্ম নেয়া বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ১৯৭৩ সালে ছিলেন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র। ওই সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট শহরে তৎকালীন সময়ে ৫টি ওয়ার্ড ছিল,৩নং তোপখানা ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনে কমিশনার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কামরান। ৬৪৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি।
এরপর ১৯৭৭ সালে আবারও ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন কামরান।এই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান কামরান। বেশ কিছুদিন পর দেশে ফিরে ১৯৮৯ সালে আবারও ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন তিনি।
১৯৯৫ সালে সিলেট পৌরসভা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিগ্রন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। সিলেট পৌরসভা থেকে ২০০১ সালের ৯ এপ্রিল সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়। ২০০৩ সালের ২০ মার্চ প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন। কামরান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মেয়র পদে। ওই সময় নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেয়ার সুযোগ না থাকায় ‘নাগরিক কমিটি’র ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। বিএনপি নেতা এম এ হককে ২২ হাজার ৫৩১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৬ এপ্রিল গ্রেফতার হন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। এক মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে ২৮ মে ফের গ্রেফতার হন তিনি।২০০৮ সালের ৪ আগস্ট সিসিকের দ্বিতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কামরান তখন কারাগারে। সেবারও তিনি নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। বিএনপি নেতা আ ফ ম কামালকে প্রায় ৮৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
এই নির্বাচনে কামরানের ভোট সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৫ হাজার ৪০৯। বিপরীতে কামাল পেয়েছিলেন মাত্র ৩২ হাজার ৯৭ ভোট। এছাড়া বিএনপি নেতা এম এ হক ২৩ হাজার ৪৮৭ ভোট।
সিসিকের তৃতীয় ও চতুর্থ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালে ও ২০১৮ সালে। নানা ষড়যন্ত্রের কারনে অল্প ভোটে পরাজিত হন। কিন্তু থেমে থাকেননি রাজনীতি ও ভোটের ময়দান থেকে।গত জাতীয় নির্বাচনে অকান্ত পরিশ্রম করেছেন দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে।
বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ১৯৬৮ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। বিভিন্ন সময়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন কামরান। ২০০২ সাল থেকে গত ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য।
বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, তিনি তার শেষ বয়সেও দলকে অতীতের ন্যায় এগিয়ে নিয়ে শেখ হাসিনার ভিশন ও ডেলটা প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাবেন।

Development by: webnewsdesign.com