১৯৯৩ সালে মুম্বাই শহরে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অন্যতম এক ষড়যন্ত্রকারীকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ। রবিবার রাতে দুবাই যাওয়ার সময় মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে গুজরাটের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস)। সোমবার ভারতীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, মুনাফ হালারি নামের ওই ষড়যন্ত্রকারীর কাছ থেকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
বাবরি মসজিদ ভাঙার উত্তেজনার মধ্যে ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ভারতের বিনোদন রাজধানী মুম্বাই শহর। এতে মারা যায় ২৫৭ জন আর আহত হয় আরও ৭১৩ জন। এই হামলায় মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে টাইগার মেমনকে দায়ী করে থাকে ভারতীয় পুলিশ। ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
মুম্বাই পুলিশ দাবি করেছে, রবিবার রাতে আটক হওয়া মুনাফ হালারি মুম্বাই বিস্ফোরণের পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) রেড কর্নার নোটিশ জারি রয়েছে। মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী টাইগারের মেমনের সহযোগী হালারি। মুম্বাই বিস্ফোরণের সময় হালারির সংগ্রহ করা তিনটি নতুন স্কুটারে বিস্ফোরক বোঝাই করে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
ভারতীয় পুলিশ বলছে, মুনাফ হালারি নিয়মিত টাইগার মেমনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে আশ্রয় নেয়। পাকিস্তানি নাগরিক পরিচয়ে থেকে গ্রেফতার ও বিচার এড়িয়েছে সে। এটিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, নাইরোবিতে সে ব্যবসা শুরু করে পরে চালসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রফতানি করতে থাকে। তবে এর আড়ালে ভারতে অস্ত্র ও মাদক পাচারের চেষ্টা চালিয়েছে বলে দাবি ভারতীয় পুলিশ।
এই বছরের ২ জানুয়ারি আরব সাগর থেকে মাদকসহ পাঁচ পাকিস্তানি নাগরিককে আটক করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গুজরাট এটিএস জানতে পারে ওই মাদক করাচির হাজি হাসানের। তদন্তকারীরা জানান, ওই মাদক ও বিস্ফোরক পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে মুনাফ হালারির সঙ্গে আলাপ করেছে হাজি হাসান।
তদন্তকারীরা জানান, ১৯৯৩ সালে পালিয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে দুইবার ভারতে প্রবেশ করে মুনাফ হালারি। ২০১৪ সালে আটারি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে মুম্বাই আসে সে। গুজরাট এটিএস এবার তার কাছ থেকে একটি পাকিস্তানি পাসপোর্ট জব্দ করেছে। ওই পাসপোর্ট দুইবার নবায়ন করেছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। আটক হওয়া মুনাফ হালারি এখন পাচারের অভিযোগসহ ১৯৯৩ সালের বিস্ফোরণের মামলার মুখোমুখি হবে।
Development by: webnewsdesign.com