বিচারপতি শওকত হোসেন অবসরে

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২০ | ৮:১২ অপরাহ্ণ

বিচারপতি শওকত হোসেন অবসরে
apps

অবসরে গেলেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেন। আজ ছিল তার শেষ কর্মদিবস। কাল থেকে তিনি অবসর সময় কাটাবেন। আজ শওকত হোসেনকে বিদায় সংবর্ধনা জানায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তাকে বিদায় সম্ভাষণ জানান। এছাড়া বিদায় সম্ভাষণ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট এ এফ হাসান আরিফ , আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার বক্তৃতায় বলেন, আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি বিচারপতি মো. শওকত হোসেনকে বিদায় সম্ভাষণ জানানোর জন্য। বিচারপতি শওকত হোসেনের আজ কর্মজীবনের শেষ দিন। এই মহামান্য আদালতের বিচারপতি হিসেবে আমরা আর আপনাকে পাবো না ।

আগামীকাল থেকে আপনার অবসর জীবন শুরু হবে। আপনি সুদীর্ঘ সময় কৃতিত্বের সঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারিক দায়িত্ব পালন করেছেন। বিচারপতি হিসেবে আপনার যুগান্তকারী রায় হলো পিলখানা হত্যা মামলাার রায়। আপনি ও আপনার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ বিশ্বের বিচার বিভাগের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এই রায় প্রদান করেন। এই রায়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আপনাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে, বিশেষ করে আপনার দেয়া অংশে অপ্রয়োজনীয় কোনো বাক্য বা বিষয় তুলে ধরেননি। এটি একটি যুগান্তকারী রায়। এই মামলার আপিল শুনানি ও রায়ে সময় দিতে গিয়ে আপনি পরিবার-পরিজনকে ঠিকমত সময় দিতে পারেননি। মামলার বিচারকালীন সময়ে আপনাকে প্রচ্ছন্ন নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যেও থাকতে হয়েছে। সর্বোপরি এই যুগান্তকারী রায়ে যাতে কোন প্রশ্ন উত্থাপিত না হতে পারে সেজন্য আপনার অবসরে যাওয়ার একদিন আগে বুধবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে গেছেন। তিনি বলেন, আপনি ছিলেন আদর্শবান, দায়িত্ববান ও ন্যায়পরায়ণ একজন বিচারপতি। আপনি ধৈর্য ধরে মামলা শুনতেন এবং সব সময় ন্যয়সম্মত বিচার করতে চেষ্টা করতেন। আপনার সততা, দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতিত, এই কারণে আপনি আইনাঙ্গনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

বিচারপতি শওকত হোসেন ১৯৫৩ সনের ১০ই জানুয়ারি রংপুর জেলার বদরগঞ্জে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আবদুস সোবহান ও মাতা মরহুমা শাহীদা বেগম। ১৯৬৮ সালে এস.এস.সি এবং ১৯৭০ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেন তিনি। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (অনার্স) এম.এ (ইংরেজি) ও এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন। বিচারপতি শওকত হোসেন ১৯৮১ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিসে মুন্সেফ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সালের ১লা মার্চ জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১০ সালের ১৮ই এপ্রিল হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০১২ সালের ১৫ই এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

Development by: webnewsdesign.com