নগ্ন ছবি আপলোড করলেন ‘ফেসবুক বয়ফ্রেন্ড’, তরুণীর আত্মহত্যা

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৬:১৭ অপরাহ্ণ

নগ্ন ছবি আপলোড করলেন ‘ফেসবুক বয়ফ্রেন্ড’, তরুণীর আত্মহত্যা
apps

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে আলাপ। একপর্যায়ে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলে নগ্ন ছবি পাঠান তরুণী। ‘ফেসবুক বয়ফ্রেন্ড’ সেই ছবি পোস্ট করে দেওয়ার জেরে আত্মহত্যা করেছে ১৯ বছরের তরুণী সুস্মিতা সরকার।

জানা গেছে, ওই ছাত্রীর বাড়ি ভারতের নদিয়ার পুরাতন চাপড়া এলাকায়। তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে শুভজিৎ রায় ওরফে শুভেন্দু নামে তার গুণধর ‘বয়ফ্রেন্ড’ এর বিরুদ্ধে। ধানতলা থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তবে অভিযুক্ত যুবক পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাকে আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। জানা গেছে, নদিয়ার ঘোলা এলাকার বাসিন্দা শুভজিৎ। তবে উত্তরপ্রদেশে তার বোনের বাড়ি রয়েছে। মামার বাড়ি নেপাল সীমান্ত এলাকায়। অভিযুক্ত যুবক সেখানে পালিয়ে গেছেন কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
অন্যদিকে রানাঘাট কলেজের বিএ সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী সুস্মিতা। মাসছয়েক আগে শুভজিতের সঙ্গে ফেসবুকে তার আলাপ। সেখানে প্রেম নিবেদন করে শুভজিৎ। প্রস্তাবে সম্মতি জানায় সুস্মিতা। এরপর তাদের দেখাও হয়েছে। তবে ফেসবুক চ্যাটেই বেশি কথা হত।

তরুণীর বাবার দাবি, মেয়ের মুখ থেকে আমি ওর এই নতুন সম্পর্কের কথা শুনেছিলাম। নিষেধ করেছিলাম ওই ছেলের সঙ্গে ফেসবুকে সম্পর্ক রাখতে। কিন্তু সে আমাদের কথা শোনেনি। ভালোবাসার ছলনা করে প্রায়ই শুভজিৎ মেয়েকে নিজের বিবস্ত্র ছবি তুলে পাঠাতে বলতো। দিনের পর দিন নিজের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে প্রেমিককে পাঠাতো সে।
তবে ঝামেলা বাধে কিছুদিনের মধ্যেই। ডিসেম্বরের শুরুতে মেয়েটির কিছু বন্ধুরা জানায় ফেসবুকে তার কিছু আপত্তিকর ছবি আপলোড করা হয়েছে। বন্ধুদের মুখে এমন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যায় সুস্মিতা। ফেসবুক ঘেঁটে আবিষ্কার করে তার নামে ফেক প্রোফাইল খোলা হয়েছে। যে ছবিগুলো সে শুভজিৎকে পাঠাতো, সেইসব গোপন মুহূর্তের ছবি আপলোড করে দেওয়া হয়েছে ওই প্রোফাইলে।
অভিযোগ উঠেছে, শুভজিৎকে সে কথা জানাতেই সে এড়িয়ে যেতে শুরু করে। ফোন করলেও ধরছিল না। এদিকে নিজের বিবস্ত্র ছবি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এসে যাওয়ায় লজ্জায় কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয় সুস্মিতা।
তার বাবা বিমল সরকার জানিয়েছেন, মেয়ে ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছিল। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম গুরুতর কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু ও লজ্জায় আমাদেরও বলতে পারছিল না। রবিবার সকালে বাজারে গিয়েছিলেন বিমল।
সে সময় পড়শিদের বাড়িতে গিয়েছিলেন সুস্মিতার মা। বাজার থেকে ফিরে বিমল দেখেন রান্নাঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। আন্দাজ করেছিলেন কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে। অনেক ডাকাডাকিতেও বন্ধ রান্নাঘর থেকে কেউ সাড়া দেয়নি। অবশেষে দরজা ভেঙে দেখা যায় রান্নাঘরের সিলিং থেকে ঝুলছে সুস্মিতার দেহ।

তড়িঘড়ি করে তাকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় ধানতলা থানায় অভিযোগ করেছেন সুস্মিতার বাবা। তার কথায়, আমার মেয়ের নোংরা ছবি ফেসবুকে দেওয়াতেই আজ এত বড় সর্বনাশ হলো। এই ছেলেটিই আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। ওর চূড়ান্ত শাস্তি চাই। আমার যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। ছেলেটি যেন পার না পায়।

Development by: webnewsdesign.com