চারঘাটে বিপিএল ঘিরে চলছে জমজমাট জুয়া

মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২০ | ১:৩৬ অপরাহ্ণ

চারঘাটে বিপিএল ঘিরে চলছে জমজমাট জুয়া
apps

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ক্রিকেট খেলা নিয়ে সমগ্র দেশ যখন উন্মাদনায় আছে ঠিক সে মুহূর্তে চারঘাট উপজেলার গ্রাম গঞ্জের যুব সমাজ এই খেলা নিয়ে জুয়ায় ব্যস্ত। ক্রমশ এর বিস্তার হয়ে যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। জুয়ায় টাকা হেরে গিয়ে অনেক যুবক চুরি ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। খেলা হয় ঢাকায় জুয়া চলে এলাকায়’ এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১১ই ডিসেম্বর ঢাকায় শুরু হওয়া দেশ-বিদেশের তারকা ক্রিকেটারদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ক্রিকেট নিয়ে তুমুল আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে ক্রিকেট প্রেমীদের মনে। এ ক্রিকেট ঝড় সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সর্বত্র ক্রিকেটপ্রেমী যুব সমাজের মাঝে বিরাজ করছে। এই যুব সমাজের একটি বড় অংশ এই খেলাটি জুয়ায় রুপান্তরিত করেছে। তারা খেলা দেখে জুয়ায় অংশ গ্রহণের জন্য।

এই জুয়া খেলার ধরন হলো- প্রতি ২০ ওভারের ম্যাচে, প্রতি ওভারে রানের ওপর এবং বলে বলে ধরা হচ্ছে টাকার বাজি। কোন খেলোয়াড় বেশি রান করবে, কোন বোলার বেশি উইকেট পাবে, কোন ব্যাটসম্যান বেশি ছক্কা মারবে, কে বেশি চার মারবে, কোন বলে চার বা ছয় হবে এবং কোন দল জিতবে এসবের উপর প্রতি মুহূর্তে চলছে বাজিধরা। এভাবে প্রতিদিন এই উপজেলায় লক্ষ লক্ষ টাকার ক্রিকেট জুয়া খেলা হচ্ছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এই জুয়ার আসরে নতুন করে সম্পৃক্ত হচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, বেকার যুবক, রিকশা-ভ্যান চালক, গাড়ির স্টাফ, দোকান কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।
পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান, অফিস, বাসা-বাড়ি, ক্লাব এমনকি যেখানেই টিভি সেখানেই চলছে বাজিধরা। এসব জুয়াড়িরা কৌশলগত কারণে অনেকটাই থেকে যাচ্ছে প্রশাসনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে টিভি দেখে সহপাঠিদের সাথে ফোন, হোয়াটসআপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের টাকা বাজি ধরা হয়। অনেকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে-বিদেশেও বাজি ধরে থাকেন। এভাবে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার ও প্রত্যন্তগ্রামাঞ্চল ক্রিকেট জুয়ায় ভাসছে। ফলে ক্রিকেট জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় যুবসমাজ।
চারঘাট পৌরসভার আড়ানী রোডের তেল পাম্পের পাশের এক মুদি খানার দোকানে,মন্ত্রী রোড,মেডিকেল মোড়,সরদহ বাজার,কাঁকড়ামারী বাজার,সিনেমা হলের পাশের এক বাড়িতেসহ একাধিক জায়গায় ছেয়ে গেছে এই জুয়ার পরিধি। সচেতন অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

এ বিষয়ে চারঘাট পুলিশিং কমিটির সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন,এক সময় মানুষ চুপিসারে জুয়া খেলত। আর এখন প্রকাশ্যে জুয়া খেলা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। এভাবে যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।গত দুই তিন বছর ধরে একটি সিন্ডিকেট চারঘাটে ক্রিকেট খেলা কেন্দ্রীক জুয়া চালিয়ে যাচ্ছে।সবকিছু জেনেও না জানার ভান করে থাকতে হয়।
চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সমিত কুমার কুন্ডু বলেন, এমন ধরনের জুয়া খেলার বিষয়ে আমার জানা নেই। এ বিষয়ে থানায় কেউ কখনও অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে উপজেলার ঐ সকল পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করে জুয়ারুদের আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

Development by: webnewsdesign.com