দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় স্থলবন্দরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে হঠাৎ করে বেড়েছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম।
প্রকারভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৬ থেকে ৭ টাকা।হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পাইকার ও সাধারণ ক্রেতারা। পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় হঠাৎ দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্র মতে, হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে, তবে আগের তুলনায় কম। একইসঙ্গে দাম আগের তুলনায় কিছুটা বাড়তি। বন্দর দিয়ে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে নাসিক ও ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হলেও নতুন সাউথের বেলোরি জাতের পেঁয়াজের আমদানি শুরু হয়েছে।
বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে ২৯ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা ২৬ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিলো। তবে নাসিক জাতের পেঁয়াজ আগের মতো ৩২টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন সাউথের বেলোরি জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩১টাকা কেজি দরে।
রবিবার (২২ আগষ্ট) সকালে হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়,বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজের সরবরাহ অন্য দিনের তুলনায় অনেক কম।ফলে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা কেজি দরে।দুই দিন আগেও ৩২ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা দরে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল জানান,বন্দরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ নেই। যারফলে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আমরা আড়ৎ থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনছি আবার বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করছি।এখানে আমাদের কোন দাম বাড়ার সুযোগ নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেলে আমাদের কেও পড়তে বিপাকে। সাধারণ ক্রেতাদের বেশি কথা বলতে হয়। আর তখন বিক্রিও অনেকটা কম হয়।
হিলি বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার আইয়ুব আলী জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমের অযুহাতে বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ কিনতে এসে দেখি হঠাৎ দাম বেশি। যারফলে আমাদের পেঁয়াজ কিনতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। কারন আড়ৎ গুলোতে কালকেই কম দামে পেঁয়াজ পাঠিয়েছি আজকে আবার দাম বেড়েছে এখন বিভ্রান্তের মধ্যে পড়ে গেছি আমরা।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক বাবু মন্ডল জানান,ভারত অভ্যন্তরে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারনে আমরা ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের আমদানি কমে দিয়েছি। ভারত থেকে আমদানি করে বন্দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৮ টাকার উপরে খরচ পড়তো। কিন্তু চাহিদা কিছুটা কম থাকায় ২৬ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হতো। এতে করে আমদানি করে লোকসান গুনতে হচ্ছিলো। এ অবস্থায় আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে পণ্যটির সরবরাহ যেমন কমেছে, দামও একটু বেড়েছে। আবার আমদানি স্বাভাবিক হলে, বাজারে সরবরাহ যেমন বাড়বে তেমনি দামও কমে আসবে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ মল্লিক বলেন, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে আগের চেয়ে আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। আগে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও, এখন তা কমিয়ে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। বন্দর দিয়ে গত (১৪ আগস্ট) শনিবার থেকে (১৯ আগস্ট) বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাঁচ কর্মদিবসে ৮৮টি ট্রাকে দুই হাজার ৪৮৪টন পেঁয়াজ এসেছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল ও পচনশীল পণ্য, তাই আমদানির সঙ্গে কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত খালাস প্রক্রিয়া শেষ করার ব্যবস্থা নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
Development by: webnewsdesign.com