আগামী ১৬ অক্টোবর থেক, রাজশাহী-পঞ্চগড়রুটে চলবে ‘বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস’ নামে নতুন একটি ট্রেন। ট্রেনটি ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করবেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার মিহির কান্তি গুহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বিবেচনা করেই এ ট্রেনটি চালু করার পদক্ষেপ নিয়েছে রেল মন্ত্রনায়।
কারণ হিসাবে তিনি পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভারত ভ্রমণযাত্রীদের কাছে। এ পথেই ভারতের শৈলশহর দার্জিলিং যাওয়া সহজ এবং বেশ কাছেও।পঞ্চগড়ের বাংলাদেশ শেষ সীমান্তের স্টেশনের নাম করন করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন। এখান থেকে ভারত সীমান্ত বাংলাবান্ধার দূরত্ব মাত্র ৪৪০ গজ বা অর্ধ কিলোমিটার।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পঞ্চগড় এই কয়েক বছর আগেও রাজশাহী বিভাগের অধীন ছিল। দাফতরিক কাজে পঞ্চগড়ের মানুষকে রাজশাহী আসত হতো বেশ কষ্ট করে। এখন সীমান্তবর্তী ছোট এ জেলাটি নবগঠিত রংপুর বিভাগের মধ্যে চলে গেছে। রাজশাহী থেকে দেশের সব এলাকা ও অঞ্চলে বহুমুখী যোগাযোগব্যবস্থা চালু থাকলেও পঞ্চগড়ের সঙ্গে যোগাযোগটা এখনও বেশ কঠিন। বিআরটিসির বাস অনিয়মিত চলাচল করে।
পঞ্চগড়ের মানুষের রাজশাহীতে আসতে হলে দিনাজপুর-রংপুর-বগুড়া হয়ে কয়েকবার বাসবদল করে আসতে হয়। সময় লাগে অনেক বেশি। একইভাবে রাজশাহী থেকে পঞ্চগড়ে যেতেও একই ভোগান্তি পোহাতে হয়।
তবে রাজশাহী থেকে যারা ট্রেনে পঞ্চগড় যান, তাদের ঠাকুরগাঁও নেমে পঞ্চগড় যেতে হয়। বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হলে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ সরাসরি পঞ্চগড় ও বাংলাবান্ধা আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনে গিয়ে নামতে পারবেন।
সীমান্ত পার হলে সেখান থেকে ভারতের শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। যারা এই পথে গিয়ে সিকিম ও নেপাল ভ্রমণ করতে চান, তাদের জন্যও এ ট্রেনটি আশীর্বাদ হবে।
রেল কর্মকর্তারা জানান, ভারত ও নেপালের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাবান্ধা পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়েছে। সেই কারণে এই প্রথম রাজশাহী থেকে সরাসরি পঞ্চগড়ের মধ্যে সরাসরি ট্রেন চালু করা সম্ভব হচ্ছে।
এদিকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতের জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও শৈলশহর দার্জিলিং যাওয়া বেশ সহজ বলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ট্রেনটি চালু করছে। রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতের মালদা ও পশ্চিম দিনাজপুর হয়ে দার্জিলিং যান।
অথবা কলকাতা থেকে বিমানে, ট্রেন বা বাসে। কিন্তু এখন কেউ চাইলেই রাজশাহী থেকে দিনে দিনে শিলিগুড়ি দার্জিলিং যেতে পারবেন সহজেই এবং দিনে দিনে। এই পথে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতেও সহজে যাতায়াতের পথ সুগম হবে। ট্রেনটি বর্তমানে পঞ্চগড়ের মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে অবস্থান করছে।জানা গেছে, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহীর দিক থেকে শুক্রবার বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ের দিক থেকে শনিবার বন্ধ থাকবে।রাত সোয়া ৯টায় বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী ছেড়ে নাটোর, আবদুলপুর, মাধনগর, আহসানগঞ্জ, সান্তাহার জংশন, জয়পুরহাট, পাঁচবিবি, বিরামপুর, ফুলবাড়ী, পার্বতীপুর জংশন, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর, সেতাবগঞ্জ, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, রুহিয়া ও কিসমত স্টেশনে বিরতি দিয়ে পঞ্চগড়ের মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে সকাল ৫টা ১০ মিনিটে পৌঁছবে।
একইভাবে সকাল সাড়ে ৮টায় মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন থেকে ছেড়ে একই পথে ট্রেনটি বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজশাহী পৌঁছাবে।রাজশাহী থেকে রাতের বেলা চলাচলের কারণে ট্রেনটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রথম শ্রেণি ও বার্থ থাকবে। এই শ্রেণির যাত্রীপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৭১৫ টাকা। অন্যদিকে শোভন শ্রেণির ভাড়া ২৮০ টাকা। পশ্চিমাঞ্চলে নতুন এই ট্রেনটি নবনির্মিত ব্রডগেজ লাইনে চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর স্টেশনমাস্টার আবদুল করিম।
Development by: webnewsdesign.com