যশোরে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে

রবিবার, ১৩ মার্চ ২০২২ | ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

যশোরে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে
apps

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির ছাতিয়ানতলা মল্লিক পাড়ার ভুয়া চিকিৎসক খন্দকার কবীর হোসেন চাকরি বানিজ্যের সাথে জড়িত। তিনি চাকরি দেয়ার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া মেডিকেল পরীক্ষার নামে প্রতি জনের কাছ থেকে বাড়তি ২০ হাজার টাকা আদায় করেন। স্থানীয়রা বলেছেন, কবীর হোসেন একজন মহা প্রতারক। তিনি সব দিক থেকে প্রতারণায় পটু। এদিকে, চাকরি বাণিজ্য ও যৌন চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতার বিষয়ে বিগত দিনে একজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করলেও কবীর হোসেন ধরাছোয়ার বাইরে থেকেছেন। লিখিত অভিযোগকারী তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন। অভিযোগের কপি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে মেইলে পাঠিয়েছেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, খন্দকার কবীর হোসেন সেনা বাহিনী ও নৌ বাহিনীতে চাকরি দেয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। চুক্তির শুরুতে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে অনেকে আবার ব্লাকমেইলিংয়ের শিকার হন। তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর জীবনে থাকলেও প্রভাব বিস্তারে গোয়েন্দা সংস্থায় চাকরি করেন বলে এলাকায় প্রচার করেন। বাসায় খেলনা পিস্তল রেখে অনেককে বোকা বানান। এছাড়া কবীর নিজেকে ওয়ারেন্ট অফিসার, কখনো মেজর পরিচয় দেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চাকরি প্রত্যাশী প্রতি জনের কাছ থেকে শুরুতেই ২০ হাজার করে নগদ টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারক কবীর হোসেন। এই টাকা নেয়া হয় মেডিকেল করানোর নামে। পরে তাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া সাদা স্ট্যাম্প রেখে দেন নিজের কাছে।
এদিকে, কবীরের প্রতারণার শিকার সাতক্ষীরার একজনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কবীর হলো একজন প্রতারক। চাকরি দেয়ার নামে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েক বছরেও চাকরি দিতে পারেননি। টাকা ফেরত চাইলে তাকে উল্টো হুমকি ধামকি দেয়া হয়। তিনি নিউকে নাম প্রকাশ না করার দাবি করেন।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা জুলহাস ওরফে সোহান জানান, তার এক বন্ধুর মাধ্যমে খন্দকার কবীর হোসেনের সাথে তার পরিচয় হয়। পরে চাকরি দেয়ার নাম করে কবীর তার কাছ এককালীন ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরে আরও টাকা দাবি করলেও প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে দেননি। এখনো তাকে ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। ফোন দিলেও তিনি আর রিসিভ করেননা।
চুড়ামনকাটি গ্রামের তাজিমুল হাসান মিন্টু জানান, খন্দকার কবীর হোসেন তার মেয়েকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ঘুষ দিতে নারাজ থাকায় যোগাযোগ করেননি। তামিজুল হাসান আরও জানান, কবীর হোসেন চাকরি দেয়ার নামে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।

প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ কারী ব্যক্তি জানান, ননী ফল নার্সারির আড়ালে কবীর হোসেনের যৌন চিকিৎসা ও চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। বরাবরই কবীর হোসেন ধরাছোয়ার বাইরে থেকেছেন। যেকারণে তার মতো অনেকেই প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।

এই বিষয়ে খন্দকার কবীর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে জানান, চাকরির জন্য দালালি করেন এটা সত্য। এভাবে তিনি অনেককে চাকরি দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে বলেন, চাকরি করার মতো কোন লোক থাকলে আমাকে বলবেন। বিভিন্ন কর্মকর্তা পরিচয়ে চলার বিষয়টি সঠিক না বলে দাবি কবীর হোসেনের।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, খন্দকার কবীর হোসেনের চাকরি বাণিজ্যের বিষয়টি জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নেয়া হবে। কোন ভুক্তভোগী লিখিত করলে তদন্ত পূর্বব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Development by: webnewsdesign.com