দক্ষিণ সুনামগঞ্জে অনিয়মকে নিয়ম করেই চলছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২০ | ৭:২৬ অপরাহ্ণ

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে অনিয়মকে নিয়ম করেই চলছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি
apps
শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ স্লোগানকে সামনে রেখে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৯ সালে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। কিন্তু গ্রাহকের উপর নানাভাবে হয়রানি ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলসহ মনগড়া বিদ্যুত বিল প্রনয়ণের ফলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির গ্রাহক হয়রানি চরমে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহকসেবার কথা কেবল মুখেই বলে। কিন্তু মিটার না দেখে অতিরিক্ত ও ভুয়া বিলে চরম ভোগান্তির শিকার গ্রাহকরা দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। এ ব্যাপারে গ্রাহকদের প্রতিবাদের কোনো জায়গাও নেই। এসব বিষয়ে অফিসে কোনো অভিযোগ করলে অভিযোগকারীকে উল্টো নতুনভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখে বিল করার নিয়ম থাকলেও এক্ষেত্রে প্রায় ৭০ শতাংশ মিটার রিডারগণ মিটার না দেখে আন্দাজে বিল তৈরি করছেন প্রতিমাসে। ওই বিল অফিসে সাবমিট করে অফিস থেকে মুদ্রিত বিল লোক মারফতে গ্রাহকের নিকট বিলি করা হয়। এমতাবস্থায় বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা।
এ ব্যাপারে উপজেলার ইনাতনগর গ্রামের মনুহর আলী নামের এক গ্রাহক জানান, পল্লী বিদ্যুতের রিডারগণ প্রায় সময় মিটার না দেখেই বিদ্যুত বিল তৈরি করে পাঠিয়ে দেন। গ্রীষ্ম মৌসুমে ফ্যানসহ বিদ্যুত ব্যবহার করেও সর্বোচ্চ ২শ থেকে ৩শ টাকা বিল এলেও এই শীত মৌসুমে গত ৩ মাসে ফ্যান ছাড়া কেবল লাইট ব্যবহারে সবচেয়ে কম বিদ্যুত খরচ হলেও বিদ্যুত বিল আগের তুলনায় দুই-তিনগুন বেশি এসেছে।
একই রকম অভিযোগ করেন চন্দ্রপুর গ্রামের রুহুল আমীন। তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুতের লোকজন মনগড়া বিল তৈরি করে লোক দিয়ে কাগজ পাঠিয়ে দেয়। কখনো মিটার দেখে, কখনো না দেখেই বিল তৈরি করে। এখন শীতের মৌসুমে বিদ্যুৎ কম ব্যবহার হলেও গ্রীষ্মের চেয়ে দ্বিগুন বিল আসে এখন
এ রকম শত শত অভিযোগ রয়েছে উপজেলা পল্লী বিদ্যুত সমিতির বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে আলাপ করতে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকায় আলাপ করা সম্ভব হয়নি। অফিসে কর্তব্যরতদের কাছে স্বেচ্ছ্বাচারী বিল প্রণয়নের কারণ জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে এটি মিটার রিডারগণের দায়িত্বে গাফিলাতি বলে উল্লেখ করেন তারা। আরও একমাস এ রকম সমস্যা থাকবে বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে মিটার রিডারের দায়িত্বে থাকা নাসির নামের এক মিটার রিডারকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পল্লী বিদ্যুতের নানা অনিয়ম, গ্রাহক হয়রানি ও ভোগান্তি বিষয়ে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার অকিল কুমার সাহার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মিটার রিডারগণের এ রকম দায়িত্বে গাফলাতি করার কোনো নিয়ম নেই। গ্রাহক যেন লিখিত অভিযোগ দেন, তিনি এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

Development by: webnewsdesign.com