ট্রাফিক আইনের জরিমানা মানতে নারাজ সাধারণ জনতা

রবিবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২১ | ৯:০৮ অপরাহ্ণ

ট্রাফিক আইনের জরিমানা মানতে নারাজ সাধারণ জনতা
মোঃ আলী হোসেন সরকার
apps

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর বিভিন্ন অপরাধ সমূহের জন্য ধারার ক্ষমতা বলে ১লা জানুয়ারী/২০২১ ইং তারিখ হতে মেশিনে ধার্যকৃত হারে ট্রাফিক মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে তার একটি আইন পাশ হয়।

ধারা ৬৬ মোতাবেক ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যাতিত মোটরযান বা গুপরিবহণ চালানো ১ম ধাপে ৫ হাজার এবং পরবর্তীতে ২য় ধাপে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৭২ মোতাবেক রেজিষ্টেশন বিহীন মোটরযান বা গণপরিবহণ চালানো ১ম দিনে ১০ হাজার এবং পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৭৫ মোতাবেক ফিটনেস বিহীন মোটরযান বা গণপরিবহণ চালানো ১ম দিনে ১০ হাজার এবং পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৮৫ মোতাবেক কোন মোটরযান এর আকৃতি বা পরিবর্ধন আবার পরিবর্তন করিলে ১ম দিকে ১৫ হাজার এবং পরবর্তীতে ২য় ধাপে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৮৬ মোতাবেক অতিরিক্ত ওজন বহণ করে গাড়ী চালানো অপরাধে ১ম ধাপে ১০ হাজার এবং ২য় ধাপে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৮৭ মোতাবেক নির্দিষ্ট গতিসীমা লঙ্গন করে গাড়ী চালানোর অপরাধে ১ম ধাপে ২ হাজার পাঁচ শত টাকা এবং পরবর্তীতে ২য় ধাপে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৮৯ (১) মোতাবেক পরিবেশ দূষণকারী কলো ধোঁয়া নি:সরণকারী গাড়ী চালনা বা পরিবেশ দূষণকারী কোন যন্ত্রাংশ মোটরযান স্থাপন করলে ১ম ধাপে ৫ হাজার টাকা এবং ২য় ধাপে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৮৯ (২) মোতাবেক ক্রটিপূর্ণ ঝুকিপূর্ণ বা নিষিদ্ধ ঘোষিত সড়কে চলাচলের অনুপযোগী মোটরযান চালনা অপরাধে ১ম ধাপে ২ হাজার ৫ শত টাকা এবং পরবর্তীতে ২য় ধাপে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৯২ (১) মোতাবেক কন্ডাক্টর কর্তৃক গাড়ী চালনা, উল্টো পথে গাড়ী চালানো, যানবাহণ থামিয়ে যানজট সৃষ্টি, চলন্ত অবস্থায় যাত্রী উঠানো, মোটরযানের ছাদে যাত্রী বা পণ্য পরিবহণ, ফুটপাতে গাড়ী চালানো, মোটরযান অনুমোদিত হস্তক্ষেপ অপরাধ সংগঠিত হলে ১ম ধাপে ৩ হাজার এবং পরবর্তীতে ৬ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৯২ (১) মোতাবেক মোটরসাইকেলে ২ জনের অধিক আরোহী ও উভয়ের হেমলেট পরিধান না করা, প্রতিবন্দি যাত্রীদের জন্য অনুকুল পরিবেশ না রাখা, অনুমোদন ব্যতীত মোটরযানে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বা প্রচার অপরাধে ১ম ধাপে ৩ হাজার এবং পরবর্তীতে ৬ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৯২ (২) মোতাবেক চলন্ত অবস্থায় চালক কর্তৃক মোবাইলে কথা বলা, সিটবেল্ট ব্যতিত গাড়ী চালনো, সংরক্ষিত আসনে অন্য যাত্রী বহণ, সিটবেল্ট না বাধা, অতিরিক্ত যাত্রী বহণ, চালক বা হেলপার কর্তৃক যাত্রী সাধারণ এর সাথে দুর্ব্যবহার, রাত্রী বেলায় হাইবিম ব্যবহার করে গাড়ী চালানোর অপরাধে ১ম ধাপে ৩ হাজার এবং পরবর্তীতে ২য় ধাপে ৬ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

ধারা ৯৫ মোতাবেক মোটরযান চালক বা হেলপার কর্তৃক সড়ক দুঘর্টনায় জখমপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা সেবা ও দুঘর্টনায় তথ্য প্রদান না করার অপরাধে ১ম ধাপে ৫ হাজার ও ২য় ধাপে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিকে হবে।

এই জরিমানা দিতে সাধারণ জনতার দাবী এটি অতিরিক্ত। জরিমানা আইন করা হয়েছে যা দেওয়ার মতো অনেকেরই সামর্থের বাহিরে। একটি লোক ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন আবার ৫০ হাজার টাকা দামের মোটরসাইকেলও ব্যবহার করেন। বাজারে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ী মোটরসাইকেল পাওয়া যায় ৫০/৬০ হাজার টাকায়। ৫০ হাজার টাকায় মোটরসাইকেল কিনলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার সামর্থ্য অনেকেরই নাই।

আবার যেন ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার আইন রয়েছে যা একটি চালকের দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না। যা অনেকেরই দেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই। এই জায়গায় আরো একটি বিষয় থাকে, অনেক সময় দেখা যায় গাড়ীর চালকের সাথে কাগজ না থাকার কারণেও ৩০ হাজার টাকার মামলা ড্রাইভারকে নিতে হচ্ছে। সেগুলো জরিমানা মালিকপক্ষ দিতে রাজি না। কারণ গাড়ীর সম্পূর্ণ কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও কেন মালিকপক্ষ তা জরিমানা দিবে। ড্রাইভার এ ভুলে জরিমানা দিতে হলে তার কতো মাসের বেতন লাগতে পারে। আবার দেখা যায়, রং এর ব্যবধান নিয়েও মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশরা। সব মিলিয়ে জরিমানা কমানোর দাবীতে জন-সাধারণের আবেদন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে।

Development by: webnewsdesign.com