চলন্ত বাসে ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েকে রেখে টাকা-পয়সা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন এক সৎ বাবা। অচেতন অবস্থায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাশতৈল পশ্চিমপাড়া ধান ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করে বাঁশতৈল ফাঁড়ি পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই মেয়ের নাম রিফা আক্তার। সৎ বাবার নাম আলমগীর হোসেন। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার শহরতলীতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর বয়সে রিফার মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা দুলাল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই রিফার বাবাও মারা যান। পরে তার সৎ মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। সৎ বাবা-মা’র অনাদর-অবহেলায় একদিন রিফা বাড়ি ছেড়ে গাজীপুরের টঙ্গি জামাইবাজার এলাকায় লতা ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেন। চাকরির পর তার সৎ বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে থাকে। রিফা তার বাবা-মা’র আদর-যত্নের আশায় প্রতিমাসে বেতনের একটা অংশ বাবার হাতে তুলে দেন। এভাবে চলে প্রায় ১০ বছর। এরই মধ্যে সৎ বাবা আলমগীরের দৃষ্টি পড়ে রিফার নামে থাকে তিন বিঘা জমির ওপর। এই জমি আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ভিন্ন কৌশল নেন তিনি।
ঘটনার দিন গত সোমবার রাতে আলমগীর রিফাকে নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু চন্দ্রা থেকে লোকাল বাসে উঠলে রিফা এর কারণ জানতে চান। উত্তরে আলমগীর জানান, হাটুভাঙ্গা এলাকায় তার এক বন্ধুর বাসায় রান্না করা হয়েছে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে বাড়ি যাবে। এরই মধ্যে চলন্ত বাসে মেয়েকে শশা এবং আমড়ার সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু খাওয়ানো হয়। পরে মেয়ে বাসেই অচেতন হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফিরে বুধবার দুপুরে রিফা দেখতে পান তিনি কুমুদিনী হাসপাতালের বিছানায়। এরপর রিফা কিছু কথা বলতে পারে বলে জানান মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. সীমান্ত।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিফা বলেন, একটু আদর স্নেহের আশায় বাবাকে টাকা দিয়েছি। তবু তা মেলেনি।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান বলেন, রিফার নামে থাকা তিন বিঘা জমি আত্মসাত করার জন্যই যেকোন উপায়ে রিফাকে সরিয়ে দেয়ার উদ্দেশে সৎ বাবা এই পথ বেছে নিয়েছেন। রিফা সুস্থ হলে আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে তিনি জানান।
Development by: webnewsdesign.com