কুষ্টিয়ায় সাজেদা ফাউন্ডেশনের কর্মীদের হাতে সদস্যরা লাঞ্ছিত

বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৬:০৮ অপরাহ্ণ

কুষ্টিয়ায় সাজেদা ফাউন্ডেশনের কর্মীদের হাতে সদস্যরা লাঞ্ছিত
apps

দেশে এনজিও কর্মীদের হাতে সদস্য হয়রানির অভিযোগ বেশ পুরনো। এনজিও কর্মীরা সদস্যদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করবেন এটা প্রত্যাশিত হলেও তা বাস্তবতায় দেখা যায় না। সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ ও জোরপূর্বক ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় করে থাকেন তারা।

ঋণ পরিশোধে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের বিশেষ সুনাম থাকলেও কুষ্টিয়া সাজেদা ফাউন্ডেশনের কর্মীদের কাছে তাদের এ সততার কোনো মূল্য আছে বলে মনেই হয় না। সকাল হলেই ঋণ সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাজির হচ্ছেন তারা। সদস্যকে বাড়িতে না পেলে ফোনে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে থাকেন। এমনকি কর্মী দলবল নিয়ে হাজির হচ্ছেন সদস্যদের বাড়ি।

কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাহিনী চারা বটতলার দক্ষিণ পাশে মতিয়ার রহমানের বিল্ডিং অবস্থিত কুষ্টিয়া শাখার সাজেদা ফাউন্ডেশনের ম্যানেজারসহ ৫/৬ কর্মী রাতে কুষ্টিয়া মোল্লাতেঘরিয়ায় এক মহিলা সদস্যকে জোরপূর্বক অফিসে তুলে আনার চেষ্টা করার ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী সদস্যর পরিবার জানান, আমারা সংকটে পড়ে কুষ্টিয়া সাজেদা ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিই। প্রতিমাসের কিস্তির টাকা ঠিকমতোই পরিশোধ করে আসছিলাম। ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ৩০ হাজার ৭৫০ টাকা পরিশোধও করেছি। এদিকে আমাদের সঞ্চয় জমা হয়েছে ৮ হাজার ৯০ টাকা।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০ সাজেদা ফাউন্ডেশনের এক কর্মী কিস্তি নিতে আসেন তাও আবার সন্ধ্যায়। সেই সময় মহিলা সদস্য বাড়িতে একাই ছিল। তখন তিনি সেই সন্ধ্যায় কিস্তি নিতে আসা কর্মীকে ২ হাজার টাকা দেন। আর বলেন বাকি ২ হাজার টাকা আমাদের সঞ্চয় থেকে কেটে নিয়েন।

কিন্তু সাজেদা ফাউন্ডেশনের সেই সন্ধ্যায় কিস্তি নিতে আশা কর্মী একথা মেনে নিতে পারে নাই। ওই দিনই রাত আটটার দিকে আবারো ম্যানেজারসহ ৫/৬ জন মিলে আমাদের বাড়িতে হানা দেন। মহিলা সদস্য আরো বলেন, আমি সেই সময় বাড়িতে একাই ছিলাম। রান্না করতেছিলাম। সাজেদা ফাউন্ডেশনের ম্যানেজারসহ কর্মীরা এসে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তারা আমার রান্না করা বন্ধ করে দেয় এবং আমাকে অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেয়। সাজেদা ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার আমার রান্না ঘরের ভিতরে ঢুকে বলেন এই রাতেই তোমাকে অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে এবং কিস্তি পরিশোধ করার পর অফিস থেকে ছাড়া হবে।

এই সময় আমার বাবা বাড়িতে এসে এই কান্ড দেখে তাদেরকে বলে আপনারা দাঁড়ান আমি আমার নাতি ছেলেকে ডাকছি। এই কথা শোনা মাত্রই তারা তড়িঘড়ি করে আমার বাড়ি ত্যাগ করেন।

এ ব্যাপারে সাজেদা ফাউন্ডেশন ঢাকা সেন্টার অফিসে কথা হলে তিনি জানান, রাতে কারোর বাসায় টাকা আনতে যাওয়া, অথবা চার-পাঁচজন এক সঙ্গে করে কোন মহিলা সদস্যের বাড়ি যাওয়া রাতে, ও বাড়ি থেকে তুলে আনা বা হুমকি-ধামকি দেয়া এমন কোনো নিয়ম আমাদের নেই।

সাধারন জনগনের মনে প্রশ্ন, তাদের মনে কি উদ্দেশ্য ছিল? তারা কি কারনে রাতে একজন সদস্যর বাড়িতে এসেছিল। তারা জানত যে এই মহিলা সদস্য বাড়িতে একাই থাকে। এজন্য কি এসেছিল? আর পৃথিবীর কোন আইনে আছে যে কিস্তি সন্ধ্যায় নিতে হয়। তাও আবার গ্রাহকের বাড়ির উপর এসে। এর সঠিক বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা না হলে তারা আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।

তারা আরো জানান, সাজেদা ফাউন্ডেশনের কর্মীদের বেপরোয়া আচরণ করছেন; সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

Development by: webnewsdesign.com