ঈদে পোশাকের সাথে চাই গহনাও

বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২ | ১:৫২ অপরাহ্ণ

ঈদে পোশাকের সাথে চাই গহনাও
apps

বাঙ্গালী নারীর ঈদ, পূজা পার্বন আর উৎসবে থাকবে না শাড়ি, চুড়ি, এটা কি মানতে পারি। শাড়ি চুড়ি ও বিভিন্ন অলংকার ছাড়া উৎসব আয়োজন একেবারেই বেমানান। এমনি করেই কথাগুলো বলছিলেন মুড়াপাড়া বাজারে সানি কসমেটিক্স এ কেনাকাটায় ব্যস্ত মনি ইসলাম। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ধরনের অলংকার, শাড়ি চুড়িতে মানায় বাঙ্গালি নারীকে।

ফয়সাল সাজঘরে অলংকার দেখছিলেন ছোট্ট মাইশা মনি।পোশাক তো কেনা হয়েছেই। এখন হাতে চুড়ি, কানের দুল, নাকের ফুল, পায়ের নুপুর বা পায়েল না হলে উৎসবের পুরোপুরি আনন্দ হবে না।
নারী, শাড়ি ও চুড়ি এই তিনটি একে অপরের সঙ্গে যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বিশেষ কোনো উৎসব মানেই মেয়েরা চুড়ির দোকানে ছুটে যাওয়া। ঈদকে কেন্দ্র করে এমন ছোটোছুটিতে এবার হরেক রকম চুড়ি মিলছে।

এর মধ্যে রঙ-বেরঙের রেশমি চুড়ি, কাটিং, ড্রিমগার্ল, তাজমহল, রিটাইল, জুনা, জয়পুরী, কলকা, বাংলালিংক, বর্ণিল কাপড় পেঁচানো সুতা-চুড়ি ও সাদামাটা লেপা চুড়িসহ মোট ১২ থেকে ১৫ ধরনের কাচের চুড়ি রয়েছে। পরিবর্তন এসেছে ডিজাইন ও রঙে। এগুলোর দাম খুব একটা বেশি নয়। মোটামুটি ডজন প্রতি ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। দামে স্বল্প হলেও দেখতে কিন্তু ভারী সুন্দর।
আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব ঈদুল ফিতর। আর ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে চলছে কেনাকাটা।ঈদ কেনাকাটা চলছে, কিন্তু গহনা থাকবে না, সেটা কি হয়! সোনা-হীরা হোক বা না হোক, অন্তত চুড়ি-নূপুর তো লাগবেই। আর এ অলংকার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখেই যেন কিনতে চান তরুণীরা।

ঈদের কেনাকাটা করতে আতলাশপুর থেকে গাউছিয় মার্কেটে এসেছেন মালিহা ইসলাম তুশি। জামা কাপড় তার আগেই কেনা হয়েছে। এখন ঘোরাঘুরি চুড়িও কানের দুল কেনা বাকি আছে। তাই কয়েকটি দোকান ঘুরে একজোড়া কানের দুল কিনলেন। কিন্তু চুড়ি কিনতে সময় লাগল না। কয়েকজোড়া পাথরের চুড়ি আর এক মুঠো টিয়ে রঙের কাচের চুড়ি দেখল, পরল আর কিনে ফেলল।

সঙ্গে থাকা বন্ধু জিজ্ঞেস করল, এক দেখাতেই পছন্দ হলো কি করে? জবাবে তার উত্তর, ‘জামার সঙ্গে মিলিয়ে দেখছিলাম। পেয়ে গেছি। ব্যাস, আর কোনো কথাই নেই। দুলটা পেতে একটু খোঁজাখুঁজি করতে হয়েছে। তবুও শেষমেশ ম্যাচ করতে পেরেছি।

এখানেই শেষ নয়। শুধু তরুণীরা নয় পোশাকের সাথে মিল রেখে অলংকার চাই ছোটদেরও। বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গৃহিনী সোনা ও রূপার তৈরি অলংকারে আগ্রহী হলেও তরুণীদের পছন্দ নানা রকম মেটাল, গোল্ড পে¬টেড, পুঁতি ও পাথরের গহনা। তবে গোল্ড পে¬টেড হোক কিংবা কাঁচের হোক, অন্যসব গহনার চেয়ে চুড়ি ও কানের দুলের কদর বেশি।

এছাড়া রয়েছে ১০ ধরনের ইমিটেশনের চুড়িও। এর মধ্যে রয়েছে এন্টিক চুড়ি, সিটি গোল্ড, ব্রেসলেট, মাল্টি, মিনা, সেট চুড়ি ও ডায়মন্ড কাট বেশি জনপ্রিয়। এসব চুড়ির দাম পড়ছে ১২০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার কিংবা আড়াই হাজার পর্যন্ত তবে এর চেয়ে বেশি দামের চুড়িও পাওয়া যাচ্ছে।

তরুণীদের ভিড়ে কানের দুলের বাজারও রমরমা। ইমিটেশন ও পাথর বসানো গহনাগুলোই বেশি চলছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার মুড়াপাড়া মার্কেটের গহনা ও প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসায়ী ছালা উদ্দীন সানী জানান, বাহারি পাথর বসানো সিটি গোল্ড কিংবা এন্টিক দুলগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গোল্ড পে¬ট, মাল্টি, মিনা ও ডায়মন্ড কাটের অলংকারেরও বেশ চাহিদা রয়েছে।

কানের দুলের দরদামের খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ৫০ টাকা থেকে শুরু করে দেড়-দুই হাজার টাকা দামের দুলগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে এন্টিক দুলের দাম ৫০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার পর্যন্ত। সিটি গোল্ডের দুলগুলো ১০০ থেকে ৫০০, গোল্ড পে¬ট ৩০০ থেকে দুই হাজার, মাল্টি ১৫০ থেকে ৫০০, মিনা ২০০ থেকে ৭০০, ডায়মন্ড কাট ২০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য দুলতো রয়েছেই।

কানের ও গলার হালকা সেটের দাম পড়ছে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। তবে ভারী অর্থাৎ জড়োয়া গহনার সেট পাথরের তুলনায় গোল্ড পে¬টেড রুবি, জারকান, স্যাফায়ার, নীলা ও পান্না বসানো বাহারি সেটগুলো ভালো চলছে। কারণ, এগুলো পাথরের সেটের তুলনায় টেকসই ও ফ্যাশনেবল। দোকানিরা জানালেন, এ ধরনের সেট ৭০০ থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।
থেমে নেই আংটির বাজারও। সিঙ্গেল আংটি হালকা থেকে ভারী পাওয়া যাচ্ছে ৪৫ থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত এবং পায়ের আংটি পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।

আর এসব গহনা পাওয়া যাচ্ছে মুড়াপাড়া মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, তারাব, রূপসী, গোলাকান্দাইল, সিটি মার্কেট, কাঞ্চন বাজার, নগরপাড়া বাজার, হাজী মার্কেটসহ বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে। তবে মার্কেট ও ডিজাইনের ভিত্তিতে দরদামের কিছুটা পার্থক্যও রয়েছে। এছাড়াও জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউসগুলো তো রয়েছেই। ফ্যাশন হাউসগুলো নতুন পোশাকের পাশাপাশি নতুন নকশার গহনাও এনেছে।

Development by: webnewsdesign.com