চান্দিনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনী মাঠ; প্রশাসনে ব্যাপক প্রস্তুতি

সোমবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২২ | ৬:৫০ অপরাহ্ণ

চান্দিনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনী মাঠ; প্রশাসনে ব্যাপক প্রস্তুতি
apps

কুমিল্লার চান্দিনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। রাত পোহালেই ভোট। যে কোন উপায়ে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট, আর্ম পার্সনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) নামের বিশেষ গাড়িসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

একদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে হুমকি অপরদিকে নৌকা প্রতীক প্রার্থীর সভা মঞ্চে প্রশাসনের হানার অভিযোগ। প্রশাসনের সাথে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাক বিতন্ডা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইএনও), আর্ম পার্সনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) নামের বিশেষ গাড়িসহ ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। ওইসব ঘটনায় পুরো নির্বাচনী এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, রবিবার (২ জানুয়ারী) বিকেলে চান্দিনা উপজেলার বরকরই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মজুদার শিপন উঠান বৈঠকের নামে সভামঞ্চ তৈরি করে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। এসময় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে হাজির হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাথে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারার অভিযোগে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারি পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইন-চার্জ। দ্বিতীয় দফায় তাদের সাথেও চলে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটুসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের বাকবিতন্ডা।

এসময় ফেইসবুক লাইভে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার বলছেন, ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে ইট-পাটকেল কে ছুড়েছে? কেন ছুড়েছে? এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা নৌকা প্রার্থীর পক্ষে সভা করছিলাম। হঠাৎ ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এসে আমাদেরকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব কিছু গুটিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এমনকি স্থানীয় এমপি’র বরাদ দিয়ে পাঁচ জনের বেশি দেখলে আটকের হুমকি দেন।

অনেকক্ষণ বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে নিষ্পত্তি হলেও দুই পক্ষের উত্তেজনার ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা জুড়ে। সন্ধ্যার পর আবারও ফেইসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু। এসময় তিনি বলেন, ‘নৌকার প্রার্থীদেরকে ফেইল করানোর জন্য প্রশাসন ধর-পাকড় শুরু করেছে। নৌকা প্রার্থীর সভা সমাবেশ বাঞ্চাল করার জন্য যা করার দরকার তাই করার চেষ্টা করছেন’। এসব ঘটনায় তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপর দোষ চাপান।

স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অভিযুক্ত করে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু’র এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য কাজী গোলাম দস্তগীর পাপন বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত নৌকার এমপি। তিনি নৌকার স্বপক্ষেই আছেন। আমাদেরসহ সকল নেতা-কর্মীদের নৌকাকে বিজয়ী করতে নির্দেশ দেন। এদিকে মুনতাকিম আশরাফ টিটু রাজনৈতিক মাঠে তার ব্যক্তি ইমেজ বাড়াতে আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয় এমপিকে দোষারূপ করে বক্তব্য দিচ্ছেন’।

চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, বরকরই ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনার পর আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়ে যায়। বর্তমানে চান্দিনায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। টিটু সাহেবের বক্তব্যে ধর-পাকড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, একজনও আটক করা হয়েছে এমন ঘটনা নেই।

এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার বলেন- ‘রবিবার রাতে আমার কার্যালয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্যার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করেন।’

 

Development by: webnewsdesign.com