হবিগঞ্জে ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালে ভাতরুমের দরজা ভাঙা ও নোংরা পরিবেশ

সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ | ৬:৪৬ অপরাহ্ণ

হবিগঞ্জে ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালে ভাতরুমের দরজা ভাঙা ও নোংরা পরিবেশ
apps

হবিগঞ্জের ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসাখাতে চলছে চরম অরাজকতা রয়েছে প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তার অভাব নেই পর্যাপ্ত তদারকি ও পরিদর্শন ব্যবস্থা, ফলে কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে এ খাত তাই চিকিৎসাখাতে সেবাগ্রহীতারা রয়েছেন জিম্মিদশায়। নিশ্চিত হচ্ছে না মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা বরং বিপুল আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। হাসপাতালের এরকম নাজুক অবস্থা দেখে গ্রাম থেকে আশা সহজ সরল রোগীদের পড়তে হচ্ছে দালালদের খপ্পরে, ফলে বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে অসাধু প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে যেগুলার অধিকাংশের ঐ নাই হাসপাতাল পরিচালনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।

এদিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালের শৌচাগারগুলোতে দুর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে। দরজা-জানালাগুলোও রয়েছে ভাঙা অবস্থায় দেয়াল ও মেঝের স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা দেখে মনে হবে না এখানে কোন পরিচ্ছন্ন কর্মী আছে। এই দুর্বস্থা ২৫০ শয্যা হবিগঞ্জ হাসপাতালের রোগীদের জন্য তৈরি গোসলখানা ও শৌচাগারগুলোর। অবস্থা এতটাই বেগতিক যে ইজ্জতের ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োজন সারতে হয় সাধারণ রোগী ও তাঁদের স্বজনদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে রোগীদের জন্য রয়েছে ৮ ওয়ার্ড। এসব ওয়ার্ডে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন নির্ধারিত শয্যা সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ সেই সঙ্গে রোগীদের স্বজন মিলে হাসপাতালে লোকের সংখ্যা দাঁড়ায় কয়েক হাজারে।

হাসপাতালে ৮টি ওয়ার্ডে ২৪টি গোসলখানা ও শৌচাগার রয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে এই শৌগাচার ও গোসলখানায় গুলোতে বিরাজ করছে দুর্গন্ধময় পরিবেশ। পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া একজন রোগীর স্বজন ইয়াওর রহমান বলেন, শৌচাগারে গেলে দরজায় আরেকজনকে পাহারা দিতে হয়। মেডিসিন ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন আমিরুল ইসলাম বলেন, গোসলখানার এমন দুর্বস্থা যে রোগী নিয়া যাওয়াই মুশকিল। চুনারুঘাট থেকে আসা ওই রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘খুব কষ্টে বাথরুম যাওয়া-আসা করা লাগে। মেঝেতে শেওলা জমে গেছে, ভয় লাগে কখন যে পিছলে পড়ে যাই।’ সার্জারী মহিলা ওয়ার্ডের গোসলখানা ও শৌচাগারে ঢোকার মুখে এলোমেলোভাবে পড়ে ছিল রোগীদের নোংরা কাপড়।

পানি জমে মেঝে পিচ্ছিল সেখানে ওয়ার্ডের এক ভর্তি রোগী আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা করাইবার জন্য আইসা এমন অবস্থা যে বাথরুমে ঢোকায় যায় না। এত গন্ধ যে বমি এসে যায়।’ এভাবে সার্জিক্যাল, গাইনি ও শিশু ওয়ার্ডসহ ৮টি ওয়ার্ডের গোসলখানা ও শৌচাগারে একই চিত্র দেখা যায়। এই ৮ ওয়ার্ডে বেসিন দেখা গেলেও সেগুলাতে পানের পিক ময়লা আবর্জনায় ভর্তি থাকলেও পরিষ্কার করতে দেখা যায়নি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.আমিনুল হক সরকার বলেন গোসলখানা ও শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না। এগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করা হয় তবে রোগী ও স্বজনদের চাপে এগুলো পরিষ্কার রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরও জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে নিয়মিত তদারকের মাধ্যমে এগুলো ব্যবহারের উপযোগী করে রাখতে।

Development by: webnewsdesign.com