সিলেটে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলো গত বছরের ৫ এপ্রিল। মঈন উদ্দিন নামে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হন। ওই বছরের ১৪ এপ্রিল প্রথম চিকিৎসক হিসেবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। প্রথম রোগী শনাক্তের প্রায় ৯ মাস পর রবিবার (৩১ জানুয়ারি) সিলেটে পৌঁছলো করোনার টিকা।
রবিবার দুপুরে ২ লাখ ২৮ হাজার ডোজ টিকা সিলেটে এসে পৌঁছেছে। এরআগে গত ২৫ জানুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসা চুক্তির তিন কোটি টিকার প্রথম চালান ৫০ লাখ ডোজ দেশে আসে। আর দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ওইদিন ঢাকায় তিনজন রোগীর শরীরের করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
রবিবার সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৯৮৮জনের। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৯ হাজার ৫৪৭ জন, সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৫৩৩ জন, হবিগঞ্জে ১ হাজার ৯৮২ জন ও মৌলভীবাজারে ১ হাজার ৯২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সিলেট বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৭৫ জন।
প্রথম দিকে করোনা নিয়ে সিলেটে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিলেও এখন তা অনেকটাই কমে এসেছে। তবে আতঙ্ক কমলেও এখনো অব্যাহত আছে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে নতুন করে ৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে দেখা দেওয়া করোনার নতুন ধরণ স্ট্রেইন সিলেটেও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। বিশেষত যুক্তরাজ্য থেকে নিয়মিত প্রবাসীরা সিলেটে আসায় এমন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় রোববার বেক্সিমকো ফার্মার একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কাভার্ডভ্যানে করে টিকা নগরীর চৌহাট্টা এলাকার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে পৌঁছায়।
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাজিয়া সুলতানা ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. প্রমানন্দ মণ্ডল সেগুলো গ্রহণ করেন। এসময় সেখানে সিভিল সার্জন ও সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে শনিবার সিলেটে টিকা পৌছানোর কথা ছিলো। তবে শনিবার দিনভর সিলেটে বিদ্যুৎ না থাকার খবরে টিকা আসা একদিন পিছিয়ে যায়।
জানা গেছে, ভ্যাকসিনবাহী ফ্রিজার ভ্যানটি শনিবার ঢাকা থেকে রওনা দেয়। পরে সকালে সুনামগঞ্জ গিয়ে ভ্যাকসিনের কিছু ডোজ নামিয়ে সিলেটের পথে রওনা হয়। পুলিশ প্রহরায় ভ্যাকসিনবাহী ফ্রিজার ভ্যানটি বেলা পৌনে ১ টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আনা হয়।
জেলা সিভিল সার্জন প্রমানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘মোট ১৯০ টি কার্টনে ২ লাখ ২৮ হাজার ডোজের টিকা বুঝে পেয়েছি। প্রতি কার্টনে ১২০০ ভায়াল আছে। প্রতি ভায়ালে ১০টি ডোজ আছে। ভ্যাকসিনগুলো আমাদের ইপিআই কক্ষে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আপাতত সেখানে পুলিশ প্রহরা আছে।’ তিনি জানান, সিলেটে প্রথম দফায় আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। সিলেট করোনার ভ্যাকসিন ১৫৩টি কেন্দ্রে বুথের মাধ্যমে প্রদান করা হবে যার মধ্যে সিলেট নগর এলাকায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ ডা. শাসসুদ্দিন হাসপাতাল, বিনোদিনী নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ ২৫ টি কেন্দ্র রয়েছে।
সিলেটে করোনা চিকিৎসার জন্য বরাদ্ধকৃত শামসুদ্দিন হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রথমে টিকা পাবেন বলে জানা গেছে।
Development by: webnewsdesign.com