সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আবারও হয়নি

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ১:৪৩ অপরাহ্ণ

সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আবারও হয়নি
apps

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে দলবব্ধ ধর্ষণের মামলার বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন বাদি পক্ষ। সেজন্য সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: মোহিতুল হক চৌধুরী মামলার সাক্ষ্য নেননি। রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধর্ষণ মামলার ৮ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাদী ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে বিচারিক আদালত পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় আদালত পরিবর্তনের এই আবেদন করা হয়। আবেদনে সিলেটের অন্য কোনো ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলাটি যেন বদলির আদেশ দেয়া হয়- সে প্রার্থনা করা হয়েছে। রবিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু হাইকোর্টে বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে আবেদনের শুনানী শেষে হাইকোর্টের গঠিত বেঞ্চ আজ আদেশ দিবেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি হাইকোর্টে থাকায় রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতে সাক্ষ্য নেয়া হয়নি। আমরা আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য সময় চেয়েছি। আদালত আমাদের যুক্তিসময় দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ সংক্রান্তে আদেশ বিকেলে দিবেন।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ধর্ষণের মামলার বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে এই আবেদনটি অ্যাডমিশন করা হয়েছে। আজ রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আলোচিত ধর্ষণ মামলার আদালত পরিবর্তন করার শুনানী শেষে সিদ্ধান্ত দিবেন হাইকোর্ট। ন্যায় বিচার না পাওয়ার আশংকা থেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বাদী বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আবেদনটি করেন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন।

জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ। এ সময় ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী ওই গৃহবধূকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতে গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয় ৬ জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়।

আসামিরা হলো- এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‌্যাব। গত ৩ ডিসেম্বর সাইফুরসহ ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনিল ভট্টাচার্য। পরে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক চৌধুরী ধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠন করেন। আর ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগপত্রটি একই আদালতে বিচারশুরু না হওয়ায় বাদী পক্ষের আইনজীবী দুটি অভিযোগপত্রে বিচার শুরু করার জন্য আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করেন। পরে মামলার বাদী আদালত পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন।

বাংলাদেশ মিডিয়া/এসআরসি-০৭

Development by: webnewsdesign.com