সিলেটে ট্রেনের তেল সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে নারী-পুরুষসহ শিশুরা

শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৪:৩৪ অপরাহ্ণ

সিলেটে ট্রেনের তেল সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে নারী-পুরুষসহ শিশুরা
apps

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও ও বিয়ালিবাজারের মাঝখানে গুতিগাঁও এলাকায় তেলবাহী একটি ট্রেনের ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এসময় ৭টি বগি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এ দুর্ঘটনার পর সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঘটনার পর পরই বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত স্থানীয়রা জলাশয়, পুকুর ও জমি থেকে বালতিসহ বিভিন্ন ধরণের পাত্র ভরে তেল সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।

ঘটনাস্থলের আশপাশের অনেক পুকুর-জলাশয়ে এ থেকে জ্বালানি তেল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে অগ্নিকান্ডসহ বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। তবে এক্ষেত্রে সর্তকবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সাথে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, তেলবাহী ট্রেনের ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়। বগিগুলো পড়ে গেলে তেল রেল লাইনের আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এ তেল সংগ্রহে ভিড় করছে মানুষ। কেউ বালতি করে কেউ গ্লাস নিয়ে তেল সংগ্রহ করেছে। দুর্ঘটনার পর পরই তেল সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে এলাকার নারী-পুরুষসহ শিশুরা। তেল সংগ্রহের জন্য বালতি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। অনেককে দেখা গেছে, ট্রেনের মধ্যে থেকেও তেল নিতে। কিছু লোককে তেল কিনতে দেখা যায়। তারা লোকজনের কাছ থেকে ২০-৩০ টাকা লিটার দরে তেল সংগ্রহ করে ড্রামে ভর্তি করে মজুদ করছে।

এ বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার খলিলুর রহমান বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁওয়ে সিলেটগামী তেলবাহী ট্রেনের ১০টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় সিলেটের সাথে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে দুটি টিম কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি রয়েছে বলে তিনি জানান। কত সময় লাগতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কাজ চলছে তবে কতসময় লাগতে পারে তা বলা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে।

সিলেট রেলওয়ে পুলিশ সুপার শেখ শরীফুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী দল কাজ করে যাচ্ছেন।

এদিকে, গুতিগাঁও এলাকার প্রবাসী সাজু মিয়ার বাড়ির পুকুরে তেলে ভরে গেছে বলে জানান তার চাচাতো ভাই লিয়াকত আলী। তিনি জানান, আশপাশের জমি, খাল ও পুকুরে তেলে ভরে গেছে। মানুষ যে যার মত সংগ্রহ করে নিয়েছে। ৬-৭ তেলবাহি বগি থেকে তেল পড়ে যায়।

কলসি ভরে তেল নিয়ে যাওয়ার সময় আক্তারুন্নেছা নামের এক গৃহবধূ জানান, সবাই যার যার মতো তেল নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমিও নিলাম।

গুতিগাঁও এলাকার বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ও হাদী উদ্দিন জানান, ট্রেনের তেল সবাই নিচ্ছে সংগ্রহ করে তাই আমরাও নিলাম। এই তেল দিয়ে কি করবেন জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের লোক আছে এগুলো তাদের কাছে বিক্রি করব। কতটুকু তেল নিয়েছেন জানতে চাইলে সিরাজ মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার টর্চ লাইটের আলো দিয়ে ১২ লিটার সংগ্রহ করেছি। আর শুক্রবার সকালে আরও ৬ লিটার। পুলিশ দৌঁড়ায় তাই বেশী সংগ্রহ করতে পারিনি।

হাদী উদ্দিন বলেন, আমি পুলিশের ভয়ে বেশী তেল সংগ্রহ করতে পারিনি। মাত্র ৪ লিটার সংগ্রহ করে বাড়িতে রেখেছি। তিনি বলেন, ফ্রি পেয়েছি তাই সংগ্রহ করেছি। সবাই করছে।

Development by: webnewsdesign.com