শেয়ারবাজারে উর্ধ্ব গতি আসার জন্যে রিপোর্টে স্বচ্ছতা জরুরি: বিএসইসি

বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১০:২৫ অপরাহ্ণ

শেয়ারবাজারে উর্ধ্ব  গতি আসার জন্যে  রিপোর্টে স্বচ্ছতা জরুরি: বিএসইসি
apps

শেয়ারবাজারে উন্নয়নে কোম্পানির আর্থিক রিপোর্টে স্বচ্ছতা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। শেয়ারবাজার বিষয়ক এক সেমিনারে বুধবার তিনি এ মন্তব্য করন। বিএসইসির নিজস্ব অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের বিষয় ছিল ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টস অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ডিটেকশন অব ফ্রড’। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. হেলাল উদ্দিন নিজামী, ড. স্বপন কুমার বালা, খোন্দকার কামালুজ্জামান। সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির পরিচালক মো. রেজাউল করিম।

এম খায়রুল হোসেন বলেন, নতুন করপোরেট গর্ভন্যান্স কোড অনুযায়ী কোম্পানির মধ্যে অডিট কমিটির প্রধান হবেন একজন স্বাধীন পরিচালক। এছাড়া চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) এবং অডিটরসহ কার কী দায়িত্ব সব কিছু নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
এতে উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারী উভয় লাভবান হয়।

আর আর্থিক বিবরণীতে থাকলে, কার্যকর পরিপক্ষ পুঁজিবাজার গড়ে উঠা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আমরা প্রকাশিত তথ্যের (ডিসক্লোজার) ভিত্তিতেই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়ে থাকি। এরপরও সব দোষ কমিশনকে দেয়া হয়। এমনকি সেকেন্ডারি মার্কেটে সূচক কমলেও দোষ হয় কমিশনের। অথচ, আমাদের কোনো বিনিয়োগ নেই। বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের কাজ হল- কারসাজি হলে চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত, চাহিদা সরবরাহ ঠিক রাখা এবং কেউ গুজব ছড়ালে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থায় নেয়া। তারপর মার্কেট ওঠা-নামা করার জন্য আমাদেরকে সমস্ত দোষ দেয়া হয়। নিয়ন্ত্রকসংস্থা হিসাবে আমরা এখানে অসহাত্ববোধ করি।

ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, আমাদের কাজের পরিধি বাংলাদেশ ব্যাংকের চেয়েও অনেক বড়। তারা শুধু ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করে। তাদের সেখানে ৭ থেকে ৮ হাজার লোকবল রয়েছে। অথচ, আমাদের মাত্র ৮৪জন অফিসার। আর পিয়ন ও দারোয়ান নিয়ে আমাদের জনবল ১৬০জন। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমরা একদিকে শক্তিশালী, অন্যদিকে অসহায়। আমরা ব্যাংক এবং অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, স্টক এক্সচেঞ্জ, এসেট ম্যানেজমেন্ট, ফার্ম ম্যানেজার এবং ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি থেকে শুরু করে শেয়ারবাজারের বাইরের কোম্পানিওস কাভার করতে হয়। তিনি বলেন, আমাদের জনবল কাঠামো চূড়ান্ত পর্যায়ে। কিন্তু এখনো লোকবল নিয়োগ করার পর্যায়ে আমরা পৌঁছাইনি।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, যখন আমরা আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) অনুমোদন দেই, ইস্যুটা সবার সামনে চলে আসে। এখানে অনেক জাগলারি হয়, সেগুলো যাতে তারা আইপিও আসার আগেই ধরতে পারে, তাতে নিয়ন্ত্রকসংস্থা শক্তিশালী হয়। এতে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে এবং শক্তিশালী হবে পুঁজিবাজার। তারমতে, তথ্যে গলদ থাকলে কোনোদিন পরিপক্ষ মার্কেট গড়ে উঠবে না।

ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট অ্যানালাইসিসের ওপর গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে প্রাধান্য দিয়ে সভা আয়োজন করেছি। কারণ পুঁজিবাজার এবং অর্থনীতিতে কী ঘটছে এগুলোকে জনগণের সামনে তুলে ধরার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো সাংবাদিকরা।

 

বিনিয়োগকারীদের অবস্থা উল্লেখ করে ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, বিনিয়োগকারী দেখে, এ কোম্পানিটির লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা কী। তারা আরেকটা জিনিস দেখবে, তা হলো কোম্পানিটির আয় এবং ক্যাশ ফ্লো। এছাড়া সংশ্লিষ্টখাতের কোম্পানিটির অবস্থা তারা বিবেচনায় নেয়।

অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ একাডেমি অব সিকিউরিটি মার্কেটয়ের (বিএএসএম) মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ, মো. সাইফুর রহমান, বিএসইসির পরিচালক কামরুল আনাম খান, এফআরসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ, সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভ্রকান্তি চৌধুরী, শেয়ারবাজারের রিপোর্টারদের সংগঠন সিএমজেএফের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

Development by: webnewsdesign.com