গোদাগাড়ীতে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৫:০৯ অপরাহ্ণ

গোদাগাড়ীতে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
apps

রাজশাহী জেলার  গোদাগাড়ী উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা, যৌতুক, চোরাচালান, সন্ত্রাস ও নাশকতা  কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলা সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী  অফিসার মোঃ জানে আলমের সভাপতিত্বে  অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর মালেক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া  খাতুন মিলি, উপজেলা সাবেক  মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আশোক কুমার চৌধুরী, গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস,।

গুরুত্বপূর্ন মতামত প্রদান করেন  করেন  উপজেলা টি.এইচ.এ ডা. আবু তালেব, মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক কলামিষ্ট মোঃ হায়দার আলী, মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার আশোক কুমার চৌধুরী, গোলাম মোস্তেফা মন্টু, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, দপ্তরের প্রধানগণ সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ  জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওসি সাহেব আপনি মাদক বিরোধী অভিযান করলে মাদক গডফাদাররেরা আপনার বিরুদ্ধে লাগবে। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর মাদক বিরোধী কথা বলাই আমার বিরুদ্ধেও লেগেছিল। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

মাদক ব্যবসায়ীরা খুবই শক্তিশালি, মাদক ব্যবসায়ীরা বলে পুলিশ, বিজিপি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের কেনা তাই তো মাদক ব্যবসা করে বীর দাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ তাদের ধরেন না কেন? পুলিশ,  বিজিপি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন বাহনীর নিকট মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না কেন? তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? তাদের গ্রেফতার করা হলে, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান   দলীয় নেতারা কোন তদবির করবেন না। প্রধান মন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। এতে প্রমান হয় মাদকের পক্ষে কেউ নেই।

আপনারা জনগনের উপর দোষ দিয়ে আপনার দায়িত্ব এড়িয়ে যাবে না। সীমান্ত এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া থাকা শর্তেও হেরোইন, ফেনসিডিল,  মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য আসে কি করে। আপনারা আরও আন্তরিক হলে কোন মাদকদ্রব্য দেশে আসবে না।

এসময় ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, মাদক বন্ধ করা পুলিশের কাজ নয়। সামাজিক প্রতিরোধ করে গড়ে তোলা হলে মাদক অনেক অংশে কমে আসবে।   ক্রিকেট জুয়াড়ি, বাল্যবিয়ে, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে  কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার,  গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসিকে আহ্বান জানান।

মাটিকাট ইউপি চেয়ারম্যান, শহিদুল করিম শিবলী বলেন,  আমার ইউপি এলাকায় হেরোইন, ইয়াবা, মাদক ইদানিং ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদিরপুর ক্লাবে মাদকের হাট বসে, মাদক ব্যবসায়ীরা বিদিরপুর ক্যাম্পে মাদক ব্যবসায়ীরা মিনি চেকপোষ্ট বসায় ফলে বিজিপি মাদক ধরতে পারবেন না। মাদক আসে সীমান্ত দিয়ে, বিজিপি সজাগ থাকলে ৯০ ভাগ মাদক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। মাদক ব্যবসা কমে যাবে।

গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন,  মাদক বন্ধ  মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে কোন পুলিশ জড়িত থাকবে না। আর  যদি থাকেন, আমাকে জানালে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা। থানায় আসতে দালাল লাগবে না। শ্রমিক, ভ্যানচালকসহ যে কেউ আসতে পারেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন মাদক ব্যবসায়ী, শিশু নির্যাতন, কোন আপরাধ করে পার পাবে না।  আমি আপনাদের সহযোগিতা করবেন। গোদাগাড়ীর গোগ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত সংঘর্ষের মামলা হয়েছে, আসামিরা বাড়ীতে ঘুমাবে না এটা স্বাভাব।

মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশের সখ্যতার অভিযোগ পূর্বে থাকেেলা এখন নেই তবে লকডাউনের কারনে  পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান কমে গেছে।  ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা দিন দিন তাদের অবৈধ বাধাহীন গতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার বসুদেবপুর, মাদারপুর, গোপালপুর মিষ্টির দোকানের সামনে হিরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিলের কারবার চলে এছাড়া রাজাবাড়ী, প্রেমতলী হাসপাতাল এলাকা, রেলবাজার মনির হোটেল, কসাইপাড়া,  মহিশালবাড়ী গরুরহাট, সুলতানগজ্ঞ, ফিরোজচত্তর, সুলতানগজ্ঞ, বাসুদেবপুর, পিরিজপুর, কুমুরপুর, মাদারপুর, শিবসাগর প্রভূতি এলাকায় অবাদে হোরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্নধরের মাদকসেবন, বেচাবিক্রিসহ ছোটবড় অপরাধ হয়। ওই স্থানে অভিযান ও মোবাইল কোর্টসহ মাদকব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।

অন্যান্য বক্তাগণ তাদের  বক্তব্যে  বলেন, গোদাগাড়ীর আইনশৃঙ্খলা ভালই আছে, তবে আরও ভাল রাখার জন্য উপজেলার  পুলিশ, বিজিপি, সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি,  স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অনেক সচেতন হতে হবে।  গোদাগাড়ীর একটাই বদনাম মাদক, হিরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল,গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক ব্যবসায়ী গডফাদার এখানে রয়েছে। গোদাগাড়ীতে  পুলিশের তালিকাভুক্ত ১৭৩ জন মাদকব্যসায়ী রযেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করলে মাদক ব্যবসা কমে আসে।

গোদাগাড়ী পৌরসভার কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরাসরি মাদক কারবারের সাথে জড়িত, একজন কাউন্সিলর নিজে হেরোইন, ইয়াবা সেবন করেন, তারা পারিবারিকভাবে সকল সদস্য মাদক কারবারি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত, পরিবারের সদস্যদের নামে বিজিপি, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার ১/৫ কেজি হিরোইন মামলার আসামী, হিরোইনসহ গ্রেফতার হলেও বের হয়ে আবার মাদক শুরু করেন এদের কারণে মাঝে মাঝে আইন শৃঙ্খলার অবনিতি হয়। করোনার কারনে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান কম হওয়ায় পালিয়ে থাকা বিভিন্ন সংস্থার তালিকাভুক্ত  মাদক ব্যবসায়ীরা বীর দাপটে এলাকায়  এসে তাদের অবৈধ কারবার   আবার চালু করায় মাদকের সহজলভ্যতা ফের শুরু হয়েছে।

ঝুলানো, মাঝি, শ্রমিক, ভান চালকসহ শূন্য  থেকে শত শত কোটি টাকার সম্পাদকের তদন্ত করে তাদের সম্পদ সরকারী কোষাগারে জমা করার ব্যপারে আলোচনা করা হয়। মাদকব্যবসায়ীদের ছেলে মেয়েদের সাথে বিবাহ সম্পর্ক থেকে বিরত থেকে তাদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ব্যপারেও আলোচনা করা হয়। বিজিপি যদি মনে করেন সীমান্ত দিয়ে মাদক তো দূরের কথা একটি পাখিও আসবে না সেটা সম্ভব। পুলিশ বিজিপিকে আরও মাদক প্রতিরোধে আরও সচেতন হতে হবে। তাদরের  এবং সমাজের অবক্ষয় প্রতিরোধে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধিদের  এ সভায় উপস্থিত থাকা প্রয়োজন কিন্তু তারা প্রায় অনুউপস্থিত থাকেন।

প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন তাই  কোনভাবে মাদকব্যবসায়ীরা যেন কোনভাবে  পার পেতে না পারেন সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে শক্ত মামলা, চার্জসীট প্রদান করতে হবে।

Development by: webnewsdesign.com