আমরা কি এদেশের নাগরিক না, সরকার কি আমাদের জন্য কিছু দেয়না?

বুধবার, ০৩ মার্চ ২০২১ | ৭:০৬ অপরাহ্ণ

আমরা কি এদেশের নাগরিক না, সরকার কি আমাদের জন্য কিছু দেয়না?
apps

ভিক্ষা করে যা পাই তা পাগল বোন জামাই ও প্রতিবন্ধী নাতির তিন বেলা খাবার দিতে পারিনা, তার মাঝে প্রয়োজন আবার ঔষুধ, ঘরে ঝালাতে পারিনা বাতি, পরিধান করাতে পারিনা ভালো কোন কাপড়, সারা দিন গ্রামে হেটে যা পায় তা খেয়ে না খেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন পার করছি, শীতের দিনের নেই পর্যাপ্ত কাতা কম্বল, কন কনে শীতের রাতে হয়না রীতিমতো ঘুম, এই ছয় মাস পার হয় ঠান্ডায় খুয়াশায় ভিঝে কোন রকম, তাঁর পর আশে বৃষ্টির দিন তাতো আরো করুন পরিনতি , রীতি মতো যেতে পারিনা গ্রামে যার কারনে কোন দিন একবেলাও খাবার ঝুটেনা, রাতে ঘুমাবো তো দূরের কথা বৃষ্টি আসলে দিনের বেলায়ও ঘরে বসে থাকা দায়, বৃষ্টি আসলে নিজের যা কিছু আছে তা নিয়ে দৌড়ে বেড়ায় পাঁশের বাড়ির বারান্দায়, এমনও দিন পার হয় একনাগাড়ে কয়েকদিন এক ভিঝা কাপড় পড়ে থাকতে হয়, নেই কোন আত্মীয় স্বজন, কিভাবে ঠিক করব ঘরটি, এই ভাঙা ঘরটিতে বোন জামাই পাগল ও প্রতিবন্ধী ১ নাতিসহ পরিবারের ৬ সদস্য বসবাস করে আসছি কোন রকম। এভাবে কেঁদে কেঁদে বলে ছিলেন দোয়ারাবাজার উপজেলার ২ নং নরসিংপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্বচাইরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা অসহায় ভিক্ষুক মহিলা দুধমেহের, চাঁন মেহের ও হাসিম পাগলার পরিবারের সদস্যরা। তাদের নিজস্ব কোনো ভিটেমাটি নেই। গ্রামে আত্মীয়-স্বজনও নেই। প্রায় ১০ বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকছেন এক আত্মীয়র উঠোনের এক চালার একটা ভাঙা ঘরে। পরিবারে রোজগারের কেউ না থাকায় আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মাথাগোঁজার ঠাঁই একমাত্র এই ঘরটি মেরামত করতে পারছেন না তারা। নতুন ঘর নির্মাণের সামর্থ্যও নেই তাদের । নিরুপায় হয়েই ভাঙ্গা করে থাকছেন তারা।

মানুষিক রোগে আক্রান্ত হাসিম পাগলা কোনো ধরনের কাজ করতে পারেন না। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এখনোব্দি অসুস্থতা নিয়ে ভাঙা ঘরে বসেই বেকার সময় কাটছে তার। দুধ মেহের জানান, নিজেই খেতে পারিনা। ছেলে, নাতিও পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে ও খাওয়াতে পারিনা। চিকিৎসা খরচ চালাবো কিভাবে আর ভাঙা ঘর মেরামতইবা করব কিভাবে? আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নাই। নির্বাচন আসলে এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার বিভিন্ন আশা ভরসা দিয়ে যায়, নির্বাচন চলে গেলে তাদের পায়ে দরেও এই কথাগুলো বলার সুযোগ পাইনা। আমরা কি এদেশের নাগরিক না, সরকার দেয়না আমাদের জন্য কিছু, আমরা চাই অন্তত মাথাগোঁজার ঠাঁই টুকু পেলে খেয়ে না খেয়ে অসুস্থ পাগল বোন জামাই, সন্তান ও প্রতিবন্ধী নাতি নিয়ে বাকিদিনগুলো কাটিয়ে দিতে পারতাম। কয়েক বছর হয়েগেলো বোন মারা গেছে, বোনের একটি প্রতিবন্ধী নাতি, এক ছেলে ও পাগল স্বামী রেখে গেছে, তাদের তো আর ফেলে দিতে পারিনা। একসাথে এক বাড়িতেই ১০ বছর ধরে আছি। আমার সামর্থ্যের যতটুকু আছে তা দিয়ে তাদের দেখাশোনা করে আসছি।

স্থানীয় প্রতিবেশী শাহ আলম ও কবির মিয়া জানান, হাসিম পাগলা , দুধ মেহের ও চান মেহেরের পরিবার একদম অসহায়, তারা গ্রামে হেটে সাহায্য তুলে মানবেতর জীবন পার করছে। সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিতে পারলে অসহায় এই পরিবারটি অন্তত রাতে ঘুমানোর ঠাই টুকু পেতো। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সকল সুহৃদয়বান ব্যক্তিদেরকে এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের একটা ঘরের ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

Development by: webnewsdesign.com