একটি জাতির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক হলো নারী। আর এই নারী ঘরে এবং বাইরে সামলে চলেন সমান দক্ষতায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা পুরুষের চেয়েও বেশি দক্ষ হিসেবে প্রমাণিত হন। ঘরকন্যা বা কম্পিউটারের কী-বোর্ডেই হোক, নারী নিজেকে প্রমাণ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। ব্যবসা, প্রকৌশল, শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প সবক্ষেত্রে নারী এগিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে সংসার এবং অফিস সামলে চলা কখনোই সহজ বিষয় নয়। বরং অনেক সময় এ কারণে কর্মজীবী নারী ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন। তবে তাদের জন্য রয়েছে একটি সুসংবাদ। যেসব নারী প্রাথমিক জীবন থেকেই কর্মজীবী হন, তারা অবসরের পরেও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সুখী থাকেন, এমনটাই বলছে গবেষণা।
কর্মজীবী নারী বেশি সুস্থ থাকেন
১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া ছত্রিশ বছরের দীর্ঘ জরিপে ত্রিশ থেকে চুয়ালিস্নশ বছর বয়সি ৫,১০০ কর্মজীবী নারীর পেশাগত এবং ব্যক্তিগত অগ্রগতি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিষয়ের বিশ্লেষণ করা হয়েছে তাদের ৬৬ থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত। জরিপের ফলাফল বলছে, যেসব নারী তাদের তরুণ বয়স থেকে অন্তত বিশ বছর ধরে উপার্জন করেছেন তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের অবনতি বা জটিলতা কম দেখা গেছে, যারা উপার্জন করেন না বা কাজের বিনিময়ে টাকা পান না তাদের তুলনায়।
কর্মজীবী নারী হতাশায় কম ভোগেন
জার্মানির ম্যাক্স পস্ন্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ডেমোগ্রাফিক রিসার্চে পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, কর্মজীবী নারী কাজ থেকে অবসর নেয়ার পরে কেবল সুস্বাস্থ্যই উপভোগ করেন না, তারা কর্মহীনদের তুলনায় অনেক কম হতাশায় ভোগেন। গবেষণামূলক বিজ্ঞানী জেনিফার ক্যাপুটোকে উদ্ধৃত করে ডেমোগ্রাফি জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে, এই গবেষণার অনেক নারী নিম্ন-মর্যাদায় ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষ-অধু্যষিত ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। এমনকি প্রতিকূল পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও তারা বাড়ির বাইরে কাজ না করে এমন নারীর চেয়ে পরবর্তী জীবনে সুখী ছিলেন।
নেতিবাচক অভিজ্ঞতা
গবেষণায় কর্মরত মহিলাদের ওপর ধারাবাহিক নেতিবাচক অভিজ্ঞতার প্রভাব বিশ্লেষণও করা হয়েছিল এবং গবেষকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এটি নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এ ছাড়া, যে নারীরা কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তারা বলেছেন যে তারা কাজের তুলনায় কম তৃপ্তি ভোগ করেছেন, তাদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব করেননি এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যও খারাপ হয়ে যায়।
Development by: webnewsdesign.com