কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো শিক্ষক উপস্থিত হননি। এতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দুষ্টুমিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রায় প্রতিদিনই এমন চিত্র দেখতে দেখতে বিরক্ত এলাকাবাসী। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে স্কুলের প্রতিটি কক্ষেই তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।

এমতাবস্থায় কাকলী ও ফেরদৌসি নামের দু’জন শিক্ষিকা উপস্থিত হন সেখানে। তারা স্কুলে তালা দেখে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে তালা খুলে দিতে বলেন। তালা না খুললে নেতাদের দিয়ে হেনস্তা করার হুমকি দেয় তারা।

এ হট্টোগোলের এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন স্কুলের সভাপতি আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, টিও, এটিও ও প্রতিমন্ত্রী সকলকে এ স্কুলের দুর্দশার কথা বলেছি। বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নেননি।

জানা যায়, ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩০জন শিক্ষার্থী। শিক্ষক রয়েছেন ৬জন। এদের মধ্যে মাহফুজা বেগম ও শিউলি আক্তার নামের দু’জন শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। ঐদিন ১১টার পর কাকলী পারভীন ও ফেরদৌসী জাহান নামের দু’জন স্কুলে উপস্থিত হন। প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান ছিলেন মাসিক সমন্বয় সভায় ও সহকারী শিক্ষক আফজাল হোসেন ছিলেন ইউআরসি ট্রেনিংয়ে।

এলাকাবাসী আল আমিন জানান, এ স্কুলে কোনো শিক্ষকই সময় মত আসেন না। পড়াশোনাও ঠিকমত হয় না। দুপুরের দিকে ওরা আসেন এবং চলে যান দুপুরের পরপরই। প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর এলাকাতেই যদি প্রাথমিক স্কুলের এমন হাল হয় তাহলে আমরা কার কাছে যাব ?

স্কুলে এলাকাবাসীর তালা ঝোলানোর বিষয়টি স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, দু’জন শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। আমি এবং একজন সহকারী শিক্ষক ট্রেনিংয়ে থাকায় কাকলী ও ফেরদৌসীকে যথা সময়ে স্কুলে আসার জন্য গতকাল বলেছিলাম। কিন্তু তারা সময় মত স্কুলে আসেননি। তাই এলাকাবাসী স্কুলে তালা ঝুলিয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে ইউএনও মহোদয় আমাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান জানান, স্কুলে তালা ঝোলানোর বিষয়টি জানতে পেরেছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।