সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে -জি.এম. কাদের

রবিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২১ | ৭:০৭ অপরাহ্ণ

সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে -জি.এম. কাদের
apps

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় কখনোই তাদের উৎসবমূখর পূজা বানচাল করতে কোরআন-কে অবমাননা করবে না। সামান্যতম ঈমান থাকলে কোন মুসলিম কোরআন-কে অবমাননা করতে ষড়যন্ত্র করতে পারে না। আবার কোরআন অবমাননার খবর সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ছড়িয়ে দিতে অপচেষ্টা করেছে একটি চক্র।

পরিকল্পিতভাবে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সরকারি সহায়তা এবং আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর পাহারার মাঝে কেমন করে পূজামন্ডপে কোরআন রাখা হলো তা তদন্ত করতে হবে। কেন আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনী ব্যার্থ হলো, এটা বের করতে হবে। তিনি বলেন, একই সময়ে এক প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানিনা বলে যে উস্কানীমূলক বক্তব্য ভাইরাল করেছেন, তার সাথে এই ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে সরকারে।

একজন অর্বাচিন ব্যক্তির মত ঐ প্রতিমন্ত্রী জননন্দিত প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে কটুক্তি করেছে, কটাক্ষ করেছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে। আবার সংবিধান পরিপন্থি কথা বলে, শপথ ভঙ্গ করেছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের পঞ্চাদশ সংশোধনীর বিরুদ্ধে কথা বলে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। খতিয়ে দেখতে হবে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী কেন উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে কোনভাবেই সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেবো না। এদেশে একই চত্বরে মসজিদ ও মন্দিরে উপসনা চলছে শত শত বছর ধরে। আমাদের পূর্ব পূরুষরাও একই সাথে ধর্মীয় আচার-আচারণ পালন করেছে। কখনো কোন সমস্যা হয়নি, এখন কেন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিশৃংখলা সৃষ্টির উদ্যেশ্যে যে কোন ষড়যন্ত্রই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা ও নব-নিযুক্ত মহাসচিবকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন গণমানুষের ভালোবাসার প্রতীক। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সকল ধর্ম পালনে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি দেশের ৯২ ভাগ মানুষের অন্তরের ভাষা বুঝেই ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন। পাশাপাশি সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। পল্লীবন্ধু গরীবের হজ্জ জুমা’র নামাজ আদায় করার কথা বিবেচনায় রেখে শুক্রবারকে সরকারী ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।

তিনি বলেন, দাঙ্গাজনিত কারণে, প্রায় ৫০ বছর রাজধানীতে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা বের হয়নি। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময় ১৯৮৯ সালে আবারো জন্মাষ্টমীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জন্মাষ্ঠমীর শুভ দিনটিকে সরকারী ছুটি ঘোষণা করেন। পল্লীবন্ধু গঠন করেছিলেন হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট। মন্দির নির্মাণ ও সংস্কারে পল্লীবন্ধুর আন্তরিক সহায়তা ছিলো সর্বজনবিদিত। মসজিদ-মন্দির সহ সকল উপসনালয়ের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মুওকুফ করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যার ধর্মীয় বিশ্বাস আছে এবং যিনি দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন সে কখনোই অন্য ধর্মাবলম্বিদের ওপর হামলা করতে পারে না।

দেশে এত গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে, তার মাঝেও কুমিল্লার মন্দিরে কে বা কারা কোরআন শরীফ রেখেছে তা বের করতে হবে। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ ডিজাইন অনুযায়ী সম্পন্ন করেছেন। দেশের প্রতিটি প্রান্তে পল্লীবন্ধুর উন্নয়ণের ছোঁয়া এখনো উজ্জল হয়ে আছে। আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে পল্লীবন্ধুর অবদান কখনোই অস্বীকার করতে পারবে না কেউ। এদেশের অনেকেরই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার নজির আছে। কিন্তু পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোন নির্বাচনেই পারাজিত হননি। কিন্তু এক প্রতিমন্ত্রী পল্লীবন্ধু এবং রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে কটুক্তি করে দেশের মানুষের ধিক্কার পাচ্ছে। ঐ প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে, আবার নতুন করে রাজনীতির হিসাব-নিকাস শুরু হবে।

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (খুলনা বিভাগ) সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য লেঃ জেঃ (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য নাজনীন সুলতানা, মোঃ জহিরুল হক জহির, লেঃ কঃ সাব্বির আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মধু, শেখ মোঃ আলমগীর হোসেন, শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, সুমন আশরাফ, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ চৌধুরী শাহীন, এস.এম. আল জুবায়ের, নড়াইল জেলা আহ্বায়ক এড. খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি রাশেদ মাজমাদার, কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি নাফিজ আহমেদ খান টিটু, চুয়াডাঙ্গা জেলা আহ্বায়ক এড. মোঃ সোহরাব হোসেন, বাগেরহাট জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজারা শফিকুল ইসলাম বাবুল, সাতক্ষীরা জেলা সহ সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম, যশোর জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বাযক মুফতি হাকিম ফিরোজ শাহ, মাগুরা জেলা আহ্বায়ক মোছাঃ সেলিনা খাতুন, এসএম মুশফিকুর রহমান, তরুন পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোড়ল জিয়াউর রহমান, ছাত্রনেতা অর্ণব চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মাখন সরকার, এমএ রাজ্জাক খান, তিতাস মোস্তফা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, হাফিজ ক্বারী ইসাহারুল্লাহ আসিফ, কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন, শাহরিয়ার জামিল জুয়েল, মাওলানা মোঃ খলিলুর রহমান সিদ্দিকী, জাফর আহমেদ রাজু, মোঃ হাবিবুর রহমান, হুমায়ুন কবীর শাওন, ইঞ্জিনিয়ার এলেহান উদ্দিন।

Development by: webnewsdesign.com