বুয়েটে জঙ্গি রাজনীতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪ | ৩:১০ অপরাহ্ণ

বুয়েটে জঙ্গি রাজনীতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের
বুয়েটে জঙ্গি রাজনীতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের
apps

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ রবিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে দলটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বুয়েটে আবরার হত্যায় কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে নেতাকর্মীদের দণ্ড হয়েছে, কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। বুয়েটের ঘটনাও তদন্ত চলছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা অপকর্ম-অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেন এবং সেই নীতিতেই আমরা এগিয়ে চলছি।’ তিনি বলেন, ‘এখানে সেদিন যা ঘটেছে, কেউ তো ওখানে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি পালন করতে যায়নি! সেখানে তো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। আজকে আমি রাজনীতি করি, সে জন্য বুয়েটে আমি যেতে পারব না? এটা কোন ধরনের আইন? এটা কোন ধরনের নিয়ম?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার একটা কথা বলতে চাই, ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে একটা অপরাজনীতি-জঙ্গিবাদের কারখানায় রূপান্তরিত করা হবে, পরিণত করা হবে—এটা যাতে না হয়। আমরা তদন্ত করে দেখছি, এ ধরনের কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারীরাই স্বাধীনতার ঘোষক আর ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।’ মতবিনিময় সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনের কোন প্রকার হস্তক্ষেপ পারবে না। আমরা এমপি মন্ত্রী সাহেবরা যদি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকি তাহলে বিনা প্রতীকে নির্বাচন করার যে উদ্দেশ্য নেত্রী করেছেন তা স্বার্থক হবে। কেউ ক্ষমতার দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। যার নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে করবেন। সে স্বাধীনতা আছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, যদি কোন অনিয়ম মনে করে তারা ব্যবস্থা নেবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। কাজেই আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ভালোভাবেই চলছে সবকিছু। এর মধ্যে দায়িত্বশীলদের এমন কিছু কথাবার্তা দলকে সংকটে ফেলে। ফ্রি স্টাইলে যা কিছু বলবেন -এটাতো আওয়ামী লীগ নয়। দলের গঠনতন্ত্র নিয়ম কানুন আছে। এগুলোর অ্যাকশন আমরা নিব। ইতিমধ্যেই কিছু অ্যাকশনও নেওয়া হয়েছে।’

‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কের জবাবটা আমরা মোটাদাগে বলি- পাঠক কখনো ঘোষক হতে পারে না। তাহলে এম এ মান্নান, সন্দীপ এরাও তো স্বাধীনতার ঘোষক! তারপরও বড় কথা এ ঘোষণার বৈধ অধিকার কার ছিল? বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কারো স্বাধীনতা ঘোষণার অধিকার ছিল না। সে ম্যান্ডেট ৭০ এর নির্বাচনে জনগণ তাকে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার লেগ্যাসি। বঙ্গবন্ধুর পর আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের লেগ্যাসি হিসেবে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। এই জনপদে সবার মৃত্যু হবে, নশ্বর পৃথিবীতে কিছুই অবিনশ্বর নয়। আজকে বঙ্গবন্ধু নেই, শেখ হাসিনাও থাকবেন না। কিন্তু তাদের উত্তরাধিকারের কোনদিও মৃত্যু হবে না,’ বলেন সেতুমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বিভিন্নজন কেউ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলেন, আবার কেউ ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেন। সেই পাকিস্তানি আমল থেকে যে ভাষায় আইয়ুব খান কথা বলেছে, আজকে সেই ভাষায় কথা বলছে বিএনপি। তাদের সব ইস্যুই মার খেয়েছে ভোটে পরাজিত হয়ে। এখন তাদের ইস্যু ভারত বিরোধিতা। আন্টি ইন্ডিয়া ফোভিয়া তৈরি করার ইস্যু খুঁজে নিয়েছে।’

রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়ে যায় তখন বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। আর তারা এখন রিজার্ভ নিয়ে কটাক্ষ করে। যখন রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, ঈদ উপলক্ষে সে রিজার্ভ আরো বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তারা না জেনে শুনেই মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে।’

বাজার দর নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু পণ্যের দাম কমেছে। বাজার উঠানামা করবেই। বিশ্ব সংকট এর জন্য দায়ী, আর শাস্তি পাচ্ছি আমরা। আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই এ সংকট অতিক্রম করার সাহস আমরা পাচ্ছি। ইনশাল্লাহ এ সংকট কেটে যাবে।’

এ সময় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সম্মেলন করে সেখানে কমিটি গঠন করা হবে। ঢাকা থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে কেন কমিটি গঠন করতে হবে?’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডক্টর হাসান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডাক্তার দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন সহ চট্টগ্রাম বিভাগের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

Development by: webnewsdesign.com