বাতাসে মরুর অগ্নিহল্কা

রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪ | ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বাতাসে মরুর অগ্নিহল্কা
বাতাসে মরুর অগ্নিহল্কা
apps

দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ; বাতাসে যেন মরুভূমির আগুনের হল্কা। থার্মোমিটারের পারদ দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে গত শুক্রবার থেকে তিনদিনের জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ; অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিটস্ট্রোকে শিশু ও বৃদ্ধসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দেশজুড়ে এমন খরতাপ পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন বিরাজ করবে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে।

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সব স্কুল-কলেজ সাতদিনের (২৭ এপ্রিল পর্যন্ত) ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ঘোষণায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটি কাটিয়ে আজ রবিবার থেকে সরকারি বিদ্যালয়গুলো খুলে যাওয়ার কথা ছিল। এর আগের দিন ছুটির এ খবর এলো। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ছুটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ইতিপূর্বে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন; গরম বিবেচনায় সাতদিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছিল অভিভাবক ঐক্য ফোরাম নামের একটি সংগঠনও। উচ্চ আদালতেও আইনজীবীদের কালো গাউন পরিধান শিথিল করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক আমাদের সময়কে বলেন, চলমান তাপপ্রবাহ চলতি মাসজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে তাপপ্রবাহের এলাকা বাড়তে, কমতে পারে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এটিই সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদী। জেলা দুটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে যথাক্রমে ৪২.৪ ও ৪২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের রেকর্ড।

এর আগে টানা চারদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছিল। গত শুক্রবার সেখানে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, আগের দিন বৃহস্পতিবার ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এদিকে গতকাল দেশের ১২ অঞ্চলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে টাঙ্গাইলে ৪০.৪, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জে ৪০.৮, রাজশাহীতে ৪১.৫; ঈশ্বরদীতে ৪২; খুলনায় ৪১.২, মোংলায় ৪১.৭, সাতক্ষীরায় ৪০.৩ এবং কুমারখালীতে ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি পর্যন্ত মৃদু, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ পর্যন্ত মাঝারি, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি পর্যন্ত তীব্র এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিবেচনা করা হয়।

চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ শুরু হয়। চৈত্রের শেষভাগ থেকেইে বাড়ছে সূর্যের তেজ। মধ্য দুপুরে সূর্যের তাপে রাস্তাঘাট আগুনের মতো গরম হয়ে উঠছে। শরীরে যেন আগুনের ফুল্কি বিঁধছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মানুষের দুর্বিষহ দশা। গরমের সর্বাধিক প্রভাব পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের যাপিত জীবনে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বের হলেও কাজ করতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষজন। প্রচণ্ড দাবদাহে হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল আগের ৯ বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে বছরের ১৬ এপ্রিল আগের ৫৮ বছরের মধ্যে ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকায় ১৯৬৫ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৭৫ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই রেকর্ড এখনো ভাঙেনি।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী ও পাবনা জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙামাটি জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

রাজশাহী ব্যুরো থেকে গতকাল পাঠানো খবরে বলা হয়, বৈশাখের সূর্য যেন আগুন ঝরাচ্ছে উত্তরাঞ্চলে। সকাল থেকে তেঁতে ওঠা রোদ দিনভর ছড়াচ্ছে আগুনের হল্কা। তপ্ত কড়াইয়ের মতো তেঁতে উঠেছে পথঘাট। দুপুর গড়াতেই তাপমাত্রার পারদ গিয়ে ঠেকেছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও ওপরে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গেল কয়েক দিনই রাজশাহীজুড়ে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। প্রখর রোদ-গরমে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে মাইকিং করে সতর্কও করা হচ্ছে। তীব্র খরায় হু হু করে নেমে যাচ্ছে রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। অবর্ণনীয় কষ্টে দিন-রাত পার করছেন এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ। মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও গরমে হাঁসফাঁস করছে। গত শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে অধিকাংশ মসজিদেই চলমান তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনসতর্কতা সৃষ্টিতে মাইকিং করছে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি।

খুলনা প্রতিনিধি জানান, তীব্র দাবদাহে পুড়ছে পুরো নগর। গতকাল শনিবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রেকর্ড ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সূর্যের প্রখর তাপের সঙ্গে তীব্র গরমে প্রাণ-প্রকৃতিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা। এতে নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না। ছন্দপতন ঘটছে দৈনন্দিন কাজকর্মে। দুপুর হতে না হতেই আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। তীব্র গরমে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঘরে ঘরে জ্বর, মাথাব্যথা ও পেটের পীড়ায় ভুগছে মানুষ।

যশোর প্রতিনিধি জানান, গতকাল (শনিবার) বিকেল ৩টায় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটি আবহাওয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়, যশোরের তাপমাত্রা এদিন ছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে পুরো দেশের মধ্যেই ছিল সর্বোচ্চ। যশোরের মানুষসহ সব প্রাণীই গরমে কাবু হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে মাঠে-ময়দানে রাস্তাঘাটে খেটে খাওয়া মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। এর মধ্যে আবার খাবার অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় খাবার পানি সংকটে পড়েছেন মানুষ, যা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লোডশেডিং তো আছেই। প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকসহ সর্দি, জ¦র ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে হাসপাতালগুলোতে। সব মিলে প্রচণ্ড গরমে সীমাহীন এক কষ্টদায়ক পরিস্থিতি বিরাজ করছে যশোরে। এ পরিস্থিতিতে প্রচণ্ড ঠান্ডা পানি বা পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকা ও যতদূর সম্ভব ছায়ায় অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে।

চুয়াডাঙ্গা, চট্টগ্রাম, পাবনা ও গাজীপুরে শিশু-বৃদ্ধসহ ৬ জনের মৃত্যু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিটস্ট্রোকে ৬ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা এসব মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করেননি। দামুড়হুদা ও চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। কর্মহীন মানুষের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থাগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, জেলায় গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সকালে সীমান্তবর্তী ঠাকুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী জাকির হোসেন (৩৫) নিজ জমিতে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই তিনি মারা যান। এছাড়া একই দিন বিকালে দামুড়হুদায় মর্জিনা খাতুন (৫৫) নামে আরও এক নারী মারা গেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে পাঠানো সংবাদে বলা হয়, আনোয়ারা উপজেলায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বোয়ালখালী উপজেলায় হঠাৎ ছয় মাস বয়সী এক শিশু মারা গেছে। পরিবার হিটস্ট্রোকে শিশুটির মৃত্যুর ধারণা করলেও তা নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা। আনোয়ারায় নিহত ছালেহ আহমদ শাহের বাড়ি রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া এলাকায়। তার ছেলে নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আনোয়ারা হলি হেলথ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, বোয়ালখালী উপজেলায় সাফা নামের ছয় মাস বয়সী এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার পশ্চিম শাকপুরা ২নং ওয়ার্ড আনজিরমারটেক সৈয়দ আলমের নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের ধারণা, বিদ্যুৎ না থাকায় শিশুটি হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। শিশুটির বাবা নিজাম উদ্দীন বলেন, বিকালে মায়ের বুকের দুধ পান করার কিছুক্ষণ পর সাফা ঘুমিয়ে যায়। সে সময় ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। ঘণ্টাখানেক পর মেয়েকে কোলে নেওয়ার পর তার শরীর ঠান্ডা অনুভব হলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পাবনা প্রতিনিধি জানান, জেলাটিতে গতকাল হিটস্ট্রোকে সুকুমার দাস (৬০) নামে একজন মারা গেছেন। এদিন দুপুরে পাবনা মধ্য শহরের রূপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা পানের সময় তিনি হিটস্ট্রোক করেন। আশপাশের লোকজন দ্রুত তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

পাবনায় গতকাল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে গোটা পাবনা জেলা। অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। প্রচণ্ড তাপের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। প্রচণ্ড গরমের কারণে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এ ছাড়া গরমে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষের যাপিত জীবন।

গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, কোনাবাড়ি এলাকা থেকে গতকাল মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। মৃত ব্যক্তির নাম সোহেল রানা (৪০)। তিনি গাজীপুর মহনগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন এনায়েতপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

Development by: webnewsdesign.com