বনানী থানা শ্রমিক লীগের কমিটি নিয়ে আবার নাটক, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন

মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩ | ৭:৩৮ অপরাহ্ণ

বনানী থানা শ্রমিক লীগের কমিটি নিয়ে আবার নাটক, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন
বনানী থানা শ্রমিক লীগের কমিটি নিয়ে আবার নাটক, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন
apps

ঢাকা মহানগর উত্তরের বনানী থানা শ্রমিকলীগের কমিটি নিয়ে বিতর্ক ও নাটকীয়তার শেষ নেই! একটা কমিটির একাধিক সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক দাবিদার। একদল বলছে, তারা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক। আরেক দল বলছে, তারা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক। কে আসল? আর কে নকল? নাটকীয়তার মাঝে কোনটা আসল আদেশ আর কোনটা নকল আদেশ এ নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। সম্প্রতি আবার নতুন করে নাটকীয়তা শুরু হয়েছে। বনানী থানা শ্রমিক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণার দুটি আদেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে।

একটি আদেশে দেখা যায়, গত ২৫ মে, জাতীয় শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের প্যাডে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ নুরুল ইসলাম (বীর মুক্তিযোদ্ধা) ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বরকত খাঁন স্বাক্ষর করা। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বনানী থানার পূর্বের সকল কমিটি বিলুপ্ত পূর্বক মোঃ সালাউদ্দিন চৌকিদার বনানী থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের (সভাপতি), নাসির উদ্দিন মোল্লা কে বনানী থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের (সাধারণ সম্পাদক) করে ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট বনানী থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এরপরে আরেকটি আদেশে দেখা যায়, ২ জুন, জাতীয় শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের প্যাডে মোঃ আজিজুল হাকিম (আহ্বায়ক) ও মোঃ ইকবাল হোসেন পলাশ (সদস্য সচিব) জাতীয় শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এর সাক্ষর। এতে উল্লেখ করা হয়েছে- বনানী থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মোঃ জুয়েল সিকদার ও সদস্য সচিব মাহাবুবুল আনসার (দীপন) এর নেতৃত্বাধীন ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আগামী ২ মাসের জন্য অনুমোদন প্রদান করা হলো এবং পূর্বের সকল কমিটি বিলুপ্ত করা হইলো।

এমন দুটি আদেশ দুইপক্ষের নেতৃবৃন্দরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে বেড়াচ্ছে এবং এক পক্ষ আরেক পক্ষের আদেশ ভুয়া বলে দাবি করছে। এতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কে আসল? কে নকল?

এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে বনানী থানায় ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হন বনানী থানা জাতীয় শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ ফরিদ খান। পরে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় শ্রমিকলীগ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ নুরুল ইসলাম ও মোঃ বরকত খাঁন স্বাক্ষরিত জাতীয় শ্রমিকলীগ এর প্যাডে লিখিত এক আদেশে দেখা যায় ফরিদ খানকে বহিষ্কার করা হয়। এবং মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এর আগে নাসির উদ্দিন বনানী থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই আদেশের কয়েক মাস পরেই দেখা যায় ফরিদ খান জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এলে বনানী থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি জুয়েল সিকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে ফরিদকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল করেন। এর পরেই শুরু হয় আসল নাটক। ওই আদেশকে ভুয়া বলে দাবি করেন নাসির উদ্দিন মোল্লা। তিনি নিজেকেই সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন।

পরবর্তীতে দেখা যায়, ১৯ মে ২০২২ মাদক ব্যবসা ও ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে বনানী থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লাকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এতে স্বাক্ষর করেন, বনানী থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মোঃ জুয়েল সিকদার এবং নিজেকে সাধারণ সম্পাদক আরেক দাবিদার মোঃ ফরিদ খান। নাসির উদ্দিন মোল্লা দাবি করেন এই আদেশ ভুয়া। একজন বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক কিভাবে আমাকে পদ থেকে অব্যাহতির আদেশে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া ফরিদ খান যদি সাধারণ সম্পাদক হোনও তিনি একজন যুগ্ন সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার আদেশ দিতে পারেন না। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত তারা দুজন দুজনকে সাধারণ সম্পাদক দাবি করে আসছেন। বনানী থানা শ্রমিক লীগের কমিটি নিয়ে নাটকীয়তা চলছেই!

গত বছরের ৩১ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া আরেকটি চিঠিতে দেখা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে বনানী থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি জুয়েল সিকদারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় শ্রমিক লীগ বনানী থানার বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদককে জাতীয় শ্রমিক লীগ মহানগর উত্তরের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি ব্যাতি রেখে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ফরিদ খানকে পুনরায় স্বপদে বহাল করা এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ফরিদ খানের স্বাক্ষরিত চিঠি সামাজিক যোগাযোগের (ফেইজবুক) মাধ্যমে প্রচার করে দেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ ও অসাংগঠনিক এবং জুয়েল সিকদারের কার্যকলাপে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, বিধায় বনানী থানার সভাপতি পদ থেকে তাকে সাময়িক ভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হইলো। ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম নুরুন নবী নাহিদ স্বাক্ষর দেখা যায় ওই চিঠিতে। জুয়েল সিকদার চিঠিটি ভুয়া বলে দাবি করে আসছেন। এদিকে নিজেকে বনানী থানা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবিকারী সালাউদ্দিন চোকিদার জুয়েল সিকদারের বিরুদ্ধে কমিটি বানিজ্য, একের পর বিতর্কিত ব্যাক্তিকে পদ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

 

Development by: webnewsdesign.com