প্রেমিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন, দুই পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ

মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারি ২০২২ | ৯:৪২ অপরাহ্ণ

প্রেমিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন, দুই পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ
apps

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রেমিক ছেলেটি সিরাজদিখান ইছাপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার দুই পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল মেম্বারের‌ নাতনির সাথে প্রেম করে আসছিল সাইফুল ইসলাম রাজন নামে এক যুবক। ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে তারা দুজনে পালিয়ে যায়। তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রেমিকার পরিবার।‌ সাইফুলের লেখাপড়া ও পারিবারিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আপত্তি ওঠে প্রেমিকার পরিবার থেকে।

পরে গত ৮ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত জয়নাল মেম্বারের বাড়িতে সাইফুলকে ডেকে নিয়ে চালানো হয় বর্বরোচিত নির্যাতন। অমানুষিক নির্যাতন করায় দুদিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে যুবক।
জানা গেছে, গত শনিবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সাইফুলকে ডেকে নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক গাছের সাথে বেঁধে মানুষের সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। পরে এলাকাবাসী সিরাজদিখান থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সাইফুল ইসলাম রাজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

আহত সাইফুল ইসলাম রাজনের নানা জজ মিয়া বলেন, আমার নাতির অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত খারাপ। আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য ঢাকায় হাসপাতালে নিয়ে যাব। তারা আমার নাতিকে পরিকল্পিতভাবে ফোন করে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তার দুটি পা ভেঙে দিয়েছে। মাথায় আঘাত করে দুই স্থানে বড় বড় গর্ত করেছে। এছাড়া লাঠিসোঁটা দিয়ে শরীরে আঘাত করা হয়েছে। দুদিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আমার নাতি।

তিনি আরও বলেন, সাবেক মেম্বার ও আলমগীরের নেতৃত্বে তার ভাই-ভাতিজারা মিলে আমার নাতিকে হাত-পা বেঁধে আসর নামাজ থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেরেছে। জানি না আমার নাতির ভাগ্যে কী আছে? আমি এর সঠিক বিচার চাই।

অভিযুক্ত মো. আলমগীর বলেন, গত দুই মাস আগে আমার ভাতিজিকে অপহরণ করছে। পরে পুলিশ গিয়ে আমার ভাতিজিকে উদ্ধার করে আনছে। আর ছেলেকে আমরা জেলে দিয়ে দিছি। হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসেছে এক সপ্তাহ আগে। এসেই আমাদের হুমকি দিয়েছে। পরে শুক্রবার খোঁজখবর নিয়ে দেখেছে আমাদের বাড়িতে লোকজন কম আছে। এই সুযোগে লোকজন নিয়ে ভাতিজিকে তুলে নিতে আসে। তখন আত্মীয়স্বজনরা ধরে তাকে গণধোলাই দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সিরাজদিখান থানার ওসি (তদন্ত) আজগর হোসেন জানান, প্রেম-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক যুবককে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই যুবকের বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের ধরতে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com