কিলার রোবট’ই কী হবে ভবিষ্যতের যুদ্ধের বড় হাতিয়ার

মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩ | ৬:২৭ অপরাহ্ণ

কিলার রোবট’ই কী হবে ভবিষ্যতের যুদ্ধের বড় হাতিয়ার
কিলার রোবট’ই কী হবে ভবিষ্যতের যুদ্ধের বড় হাতিয়ার
apps

‌‌‘কিলার রোবট’ই কী হবে ভবিষ্যতের যুদ্ধের বড় হাতিয়ার? যুদ্ধটা কী হয়ে পড়বে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নির্ভর? এই প্রশ্নের উত্তরও খুব একটা কঠিন নয় হয়তো। যুদ্ধের ভবিষ্যত হিসেব আবির্ভূত হওয়া ‘কিলার রোবট’ মানব সভ্যতাকে কতোটা বিপন্ন করে তুলবে সে বিষয়েও বিস্তর চিন্তায় মগ্ন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা।

নয়া যুদ্ধ ব্যবস্থার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মানব সভ্যতা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উন্নয়ন এই নয়া দ্বার উন্মোচন করছে। দেখা গেছে এখন রোবটই নিঁখুতভাবে নিশানা ভেদ করতে পারছে। নিজেরাই মানুষ হত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সনাক্ত করে। এই রোবট সেনাদের হামলা চালাতে কোনো মানব অফিসারের নির্দেশনার দরকারও পড়ছে না।

এইসব অস্ত্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র পদ্ধতি বলা হচ্ছে। তবে সমালোচকরা একে বলছেন, ‘কিলার রোবট।’ যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, ভারত, ইরান, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও তুরস্ক এ ধরনের সমরাস্ত্রের উন্নয়নে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তুরস্কের নির্মিত কারগু-২ ড্রোনটি পুরোপুরিভাবে স্বনিয়ন্ত্রিত পদ্ধিতে কাজ করে। ২০২০ সালে এই ড্রোন দিয়েই লিবিয়ায় হামলা চালানো হয়েছিল।

ইউক্রেন যুদ্ধেও এমন স্বয়ংক্রিয় ড্রোনের কারসাজি দেখা যাচ্ছে। মস্কো ও কিয়েভ দুই পক্ষই শত্রু বিনাশে চালকবিহীন অস্ত্র ব্যবহার করে চলেছে। আর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের এমন ব্যবহারে আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন বিশ্লেষকরা। কিলার রোবটের এমন যথেচ্ছা ব্যবহার ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে।

অনেকেই বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, যুদ্ধক্ষেত্র পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় রোবটদের দখলে চলে যাওয়ার আগেই এদের থামানো উচিত। না হয় ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলো হয়ে উঠবে আরও বিভীষিকাময়।

যদিও রণাঙ্গণে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার বন্ধের কোনো লক্ষ্মণ নেই। উল্টো দিনে দিনে এমন অস্ত্র আবিষ্কার ও উন্নয়নের প্রতিযোগিতা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রতিযোগিতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। ক্ষয়ক্ষতি কমানোর নাম করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্যবহারে ধ্বংসের ব্যাপকতা বাড়ছে। মানব জীবনও পড়ছে বড় হুমকির মুখে।

বিশ্বের নানা প্রান্তে ‌‘কিলার রোবট’দের বিরুদ্ধে ছোটোখাটো আন্দোলন গড়ে উঠলেও আদতে সেসব কাজে আসছে না। জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে যতোটা সক্রিয় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের বেলায় ততোটা নয়।

সিডনির ‘ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ওয়েলসের’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ টবি ওয়ালশ বলেছেন, ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে অ্যালগরিদম গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যবহার করা হয় যাতে এটি পথচারীদের পিষে না দেয়। বিপরীতে একই অ্যালগরিদম স্বয়ংক্রিয় ড্রোনে ব্যবহার করা হয় টার্গেট সনাক্ত করে তার গতিবিধি অনুসরণ করতে এবং এটি মানুষকে এড়িয়ে যাওয়া মানে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচানোর বদলে হত্যার লক্ষ্য বানায়।

তাই এ প্রযুক্তি মানব সভ্যতা ধ্বংসের কাজে না লাগিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানোর পরমার্শ দিয়েছেন তিনি।

সূত্র: আল জাজিরা

Development by: webnewsdesign.com