সাংহাইয়ে লকডাউন তীব্র খাদ্য সংকট

কমলার বদলে বিড়ালের সঙ্গ

দুই সপ্তাহ ধরে খাবার বিতরণ করছে স্থানীয়রা

রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২ | ৩:৩৫ অপরাহ্ণ

কমলার বদলে বিড়ালের সঙ্গ
apps

কমলা বিনিময় করে আধা ঘণ্টার জন্য বিড়ালের সঙ্গ কিনলেন চীনের সাংহাই শহরের এক বাসিন্দা। সাংহাই শহরে চলছে তীব্র খাদ্য সংকট। অনির্দিষ্টকালের জন্য চলছে লকডাউন। হঠাৎ করে শুরু হওয়ায় ঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেনি বেশির ভাগ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা ইং চেংতুও এই অবস্থার একজন ভুক্তভোগী।

গত ২০ মার্চ তাদের এলাকায় একজনের কোভিড ধরা পরায় বাসায় থাকতে বলা হয় তাদের। কিন্তু এর মাঝে শহরে সংক্রমণের সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ায়, অনিশ্চিতকালের জন্য শুরু হয় লকডাউন। অনিশ্চয়তার রেশ ধরে শুরু হয় খাদ্য সংকট। ইং বলেন, ‘মার্চে আমার কোয়ারেন্টিন শুরু হওয়ার আগে দুই বস্তা চাল কিনে এনেছিলাম যাতে না খেয়ে থাকতে না হয়। কিন্তু এখন সময় বাড়ানোয় আমরা পড়েছি বিপদে। খাবারও আসছে শেষ হয়ে।’

কী খাব? কী খাবে পরিবার? চিন্তায় চিন্তায় রীতিমতো অন্ধকার দেখছিলাম চোখে। ঠিক এই সময়েই অদ্ভুত এক বুদ্ধি এলো মাতায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবেশীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে একটা গ্রুপ খুলি। ‘এখানে আমরা খাবারসহ প্রতিদিনের নানা দরকারি জিনিস নিজেদের মধ্যে বিনিময় শুরু করি।

একজনের আটা আছে, অন্যজনের সবজি নেই- এভাবেই চলে আমাদের আদান-প্রদান। এর মধ্যেই একদিন, আমার পাশের ফ্লাটে থাকা প্রতিবেশী তাকে অর্ধেক বক্স ফল আছে বলে জানায়। বহুদিন ফল না খেতে পারায় সেই সুযোগ লুফে নেন ইং। ‘আমি সাথে সাথে তাকে আমাদের চ্যাটে যোগ করে নেই। আমার রান্না করা হটপটের (খাবার) বিনিময়ে আমাকে ফল দেবে কি-না জানতে চাই।’

এ অবস্থায় হটপট পাওয়া যেন ঈদের চাঁদ। খুশি হয়ে আমাকে আরেকটি কমলা দেন তিনি। ‘আমার শুধু মনে হচ্ছিল বিনিময়ে আমি তাকে কিভাবে খুশি করতে পারব। তখন মনে পড়ল তিনি আমার কমলা রঙের কোনো বিড়াল আছে নাকি জানতে চেয়েছিলেন একবার। তাই আমার বিড়ালের সঙ্গে ৩০ মিনিট খেলার প্রস্তাব দেই এবং তিনি সেটা গ্রহণ করেন।’ নিজেদের এলাকার ভিতর চলাফেরা সচল হওয়ায় বিড়াল নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে যান তিনি।

প্রিয় বিড়াল সম্পর্কে ইং বলেন, ‘প্রিয় বিড়ালটির সঙ্গে সব সময় না খেললেও তার সঙ্গটাই আমার কাছে অনেক কিছু। এই দুর্দিনে বিড়ালের সঙ্গই মানসিকভাবে সচল রেখেছে আমাকে।’ প্রসঙ্গত, খাদ্য সংকট এতটাই চরম আকার ধারণ করেছে যে, গত ২ সপ্তাহ থেকে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা খাবার বিতরণে নেমে পড়েছে।

Development by: webnewsdesign.com