অপহরণ চক্রটি ফাঁদ পেতে অপহৃত দের ঘরে আটকে নারী সদস্যদের সঙ্গে অশ্লীল ছবি তুলে রাখত। এরপর মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দিত অপহৃতদের। অপহরণের ঘটনা প্রকাশ করলে নারীর সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত অপহৃতকে। অবশেষে ওই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র। রোববার রাজধানীর মিন্টোরোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো- সাদেকুল ইসলাম, মো. ইফরান, কুতুব উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী রিফাত, গোলাম রাব্বি ও মাছুম রানা। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগাজিন, একটি ছুরি, একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ গত শনিবার রাজধানীর দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২৯ নভেম্বর রাতে আনোয়ারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণকারীরা উত্তরায় রাস্তা থেকে একটি মাইক্রেবাসে তুলে নিয়ে যায়। অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রাখা হয় তাকে। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা অপহৃতের স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছে ফোনে মুক্তিপণ দাবি করে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তিন লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে তাকে উত্তরার ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পুর্ব থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নেমে জানতে পারে, কয়েকদিনের মধ্যে একটি অপহরণ চক্র চারজনকে অপহরণ করেছে। সবাইকেই মুক্তিপণ আদায়ের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশ্য আনোয়ারুল ছাড়া অপর তিন অপহৃত পুলিশকে বিষয়টি জানাননি।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, মানুষকে অপহরণের পর চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে অপহৃতের অশ্লীল ছবি তুলে রাখত, যাতে অপহৃত ছাড়া পাওয়ার পর মুখ খুলতে না পারে। যদি এ বিষয়ে পুলিশ অথবা অন্য কারো কাছে অভিযোগ করে তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ছবি ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখানো হতো। তাই সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কায় তারা চুপ থাকত। এছাড়াও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা হতো অপহৃতদের। কেউ অপহরণের শিকার হলে পুলিশকে অবহিত করার আহ্বান জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
Development by: webnewsdesign.com