একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীত গুরু পন্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই

মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫ | ৭:৪৪ অপরাহ্ণ

একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীত গুরু পন্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই
apps

এশিয়া উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের পুরোধার পন্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই ।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটায় রাজশাহী মহানগরী রানীবাজার এলাকায় নিজ বাসভবন মোহিনী গার্ডেনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।

তিনি ফরিদপুর জেলার চৌদ্দরশি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে ১৯২৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর (১ আশ্বিন, ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ), অমরেশ রায় চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। যখন মাত্র পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তখন তার মা রাজলক্ষী রায় চৌধুরী-এর একান্ত আগ্রেহে প্রথম হাতে খড়ি হয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত কলাকার ও বিশিষ্ট সুরকার ফরিদপুরের সুধীর লাল চক্রবর্তী-এর কাছে। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর পরে সিরাজগঞ্জের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতবিদ হরিহর শুক্লা-এর নিকট কয়েক বছর তালিম গ্রহণের পরে তিনি সুদীর্ঘ সময় উপমহাদেশীয় মার্গ সঙ্গীতের স্বনামধন্য সঙ্গীত সাধক ফরিদপুর জেলার কোটালীপাড়ার সঙ্গীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী-এর কাছে ধ্রুপদ, খেয়াল ও ঠুমরীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

উপরন্ত ময়মনসিংহ জেলার নেত্রকোনার বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার নিখিলচন্দ্র সেন-এর কাছে আধুনিক গান, অতুলপ্রসাদ, রাগপ্রধান, নজরুল সঙ্গীত ও শ্যামা সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেন। এছাড়া, সঙ্গীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী-এর সুযোগ্য পুত্র প্রখ্যাত সঙ্গীত কলাকার মানস চক্রবর্তী-এর কাছেও বেশ কয়েক বছর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন।

১৯৪৫ সালে বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমী থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পর লেখাপড়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সাথে সাথে একান্ত নিষ্ঠার সঙ্গে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিক্ষা ও চর্চা অব্যাহত থাকে। খুব ছোটো বেলা থেকেই তাঁর রাগ সঙ্গীতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পরিলক্ষিত হয়। জগতে প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য তার বৌদি শ্রীমতি পাপিয়া রায় চৌধুরী, ছোটো কাকা গৌর গোপাল রায় চৌধুরী এবং মেজো ভাই নিত্য গোপাল রায় চৌধুরী-এর অবদান চিরস্মরণীয়।

তিনি ১৯৬১ সাল থেকে রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকায় মোহিনী নিকেতন বাসভবনে বসবাস করতেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর, শিল্পকলা পদক ২০১৪ ও ২০১৬ সালে শিল্পকলা শাস্ত্রীয় সংগীতে একুশে পদকে ভূষিত হন। আজ বিকেল চারটায় রাজশাহী মহানগর পঞ্চবটি শ্মশানে তার দাহ কার্য সম্পন্ন করা হবে।

মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান।

Development by: webnewsdesign.com