কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার খাতে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে পারে বলে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেে হোয়াইট হাউজে। চ্যাটজিপিটি ও বার্ডের মতো সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা বিভিন্ন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) চ্যাটবট এরই মধ্যে জনগণের নজর কেড়েছে। এসব চ্যাটবট সাধারণ ব্যবহারকারীদের ‘জেনারেটিভ এআই’ নামে পরিচিত এক ব্যবস্থার সঙ্গে কথোপকথনের সুযোগ দেয়। আর এগুলো মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একাধিক সূত্র থেকে তথ্য সংক্ষেপে আনতে, কম্পিউটার কোড ডিবাগ করতে, প্রেজেন্টেশন লিখতে এমনকি বিভিন্ন এমন কবিতা শোনাতে পারে, যা খালি চোখে মানুষের লেখা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
ওয়াশিংটনে হওয়া দুই ঘণ্টার ঐ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গুগলের সিইও সুন্দার পিচাই, মাইক্রোসফট প্রধান সাত্যিয়া নাদেলা, ওপেন এআই প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যান, অ্যান্থোপিকসের দারিও অ্যামোদেই। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, বাইডেনের চিফ স্টাফ জেফ জিয়েন্টস, ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক লায়েই ব্রেইনার্ড, মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান এবং বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো।
এদিন হোয়াইট হাউজে জড়ো হওয়া প্রযুক্তি নির্বাহীদের জানানো হয়, ‘নিজস্ব পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার’ বিষয়টি নির্ভর করে কোম্পানির নিজের ওপরই। আর দেশটির প্রশাসন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নতুন প্রবিধান ও আইনের জন্যও উন্মুক্ত বলে তাদের সতর্ক করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দপ্তর। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা কোম্পানি ওপেনএআইর প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান প্রতিবেদকদের বলেন, এআই নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে ‘চমকপ্রদভাবেই একমত ছিলেন’ নির্বাহীরা। বৈঠকের পর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এক বিবৃতিতে বলেন, নতুন প্রযুক্তি জনগণের নিরাপত্তা, প্রাইভেসি ও নাগরিক অধিকারের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে, এতে মানুষের জীবন উন্নত করার সম্ভাবনাও রয়েছে। তিনি আরো বলেন, নিজেদের পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বেসরকারি খাতের ‘একটি নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব’।
এদিকে, সাতটি নতুন এআই গবেষণা প্রতিষ্ঠান চালুর উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন’ থেকে ১৪ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এর আগে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও প্রযুক্তি নেতা উভয় পক্ষ থেকেই উদীয়মান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার নাটকীয় উত্থান নিয়ন্ত্রণের আহ্বান এসেছে। এই সপ্তাহের শুরুতে গুগলে নিজের চাকরি ছেড়ে দিয়ে এআই’র ‘গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত জেফ্রি হিনটন বলেন, তিনি এখন নিজের কার্যক্রমের জন্য অনুতপ্ত। তিনি বলেন, এআই চ্যাটবটগুলোর কয়েকটি বিপজ্জনক ব্যবস্থা ‘বেশ ভয়ানক’। মার্চে ইলন মাস্ক ও অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াকের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে এই প্রযুক্তির বিকাশ সাময়িকভাবে স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়। আর গেল বুধবার ‘কীভাবে ও কী কারণে এআই নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন’, সে সম্পর্কে নিজের মতামত তুলে ধরেন মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)’র প্রধান লিনা খান। অন্যদিকে, এআই দ্রুতই মানুষের ‘চাকরি নিয়ে নিতে’ পারে, এমন শঙ্কাও রয়েছে। সেইসঙ্গে চ্যাটজিপিটি ও বার্ডের মতো বিভিন্ন চ্যাটবট ভুল হতে পারে বা ভুল তথ্য প্রচার করতে পারে, এমন শঙ্কাও আছে।
সূত্র : বিবিসি ও আল-জাজিরা।
Development by: webnewsdesign.com