রাষ্ট্রকে খেয়াল রাখতে হবে কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা?

বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১:৩৫ অপরাহ্ণ

রাষ্ট্রকে খেয়াল রাখতে হবে কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা?
apps

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন মনে করেন বাহিনী হিসেবে র‌্যাব এবং সংস্থাটির ৭ কর্মকর্তার ওপর বিদ্যমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সব পক্ষকে আস্থায় নিয়েই বাংলাদেশের অগ্রসর হওয়া উচিত। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সমালোচকরা সমালোচনা করবেন, দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো সামনে নিয়ে আসবে, এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এটা তাদের কাজ। কিন্তু রাষ্ট্রকে খেয়াল রাখতে হবে কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা? এবং সে মতে সম্মিলিতভাবে সবাইকে অন-বোর্ডে নিয়েই এগুতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পেছনে তৃতীয় কোনো রাষ্ট্র বা বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের কোনো নমুনা পাননি বলে জানান তিনি। যমুনা টিভির সাক্ষাৎকারধর্মী এক অনুষ্ঠানে সচিব এসব কথা বলেন। ‘চলতে চলতে’ শিরোনামের ওই অনুষ্ঠানে কূটনৈতিক প্রতিবেদক মাহফুজ মিশুর মুখোমুখি হয়েছিলেন মাসুদ বিন মোমেন। সেখানে তার কাছে প্রশ্ন ছিল মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, এর প্রভাব, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তথা ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন নিয়ে।

তিনি সব প্রশ্নেরই খোলামেলা জবাব দিয়েছেন। বলেন, নিষেধাজ্ঞার পেছনে বাইরের কারও যুক্ততার নমুনা আমরা পাইনি। সমাধান প্রশ্নে তিনি বলেন, এর চটজলদি কোনো সমাধান নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দূতাবাসগুলো হয়তো সামনে থেকে কাজ করবে। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে এখানে মাল্টি স্টেকহোল্ডার রয়েছে। সবাইকে অনবোর্ড করেই আমাদের এগুতে হবে। এটা মোকাবিলায় এক বছর দেড় বছর এমনকি দুই বছরও লাগতে পারে জানিয়ে সচিব বলেন, মানবাধিকার সংস্থার কাজ বা পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন নেই। তবে এটার সঙ্গে অন্য কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা ষড়যন্ত্র আছে কিনা? তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। একইসঙ্গে মানবাধিকারের বিষয়গুলো আমরা আরও ভালোভাবে অ্যাড্রেস করবো। আমরা সে পথেই হাঁটছি। অনেকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন জানিয়ে সচিব বলেন, এটা আমাদের জন্য সুযোগও বটে। যত রেমিডিয়াল মেজারস নেয়া যায় তাই আমরা গ্রহণ করবো। ওই নিষেধাজ্ঞাকে পুঁজি করে আন্তর্জাতিব ষড়যন্ত্র হতে পারে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে সচিব বলেন, সেটা টের পাচ্ছি আমরা এবং তা কাউন্টার করতেই তৎপর রয়েছি। র‌্যাবের কর্মকর্তা যারা শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বর্তমানে কাজ করছে তাদের প্রত্যাহার হলে ভাবমূর্তির সংকট হবে কিনা? এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, র‌্যাব সদস্য হিসেবে কাউকে শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হয় না। তাছাড়া কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বাংলাদেশ পাঠায় না, জাতিসংঘ তাকে গ্রহণও করবে না। এই ঘটনায় র‌্যাবে কাজ করতে নিয়মিত বাহিনীর সদস্যরা নিরুৎসাহিত হবে কিনা? সচিব বলেন, তারা যাতে নিরুৎসাহিত না হন সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় সরকারকে ১০০ ভাগ সাহায্য করতে হবে। তাদের পক্ষে লিগ্যাল ফাইট দিতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে শতভাগ অ্যাফোর্ট দিচ্ছে বলে জানান তিনি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে কিনা? এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, রপ্তানি কোনো চ্যারিটি নয়, প্রতিযোগিতা করেই বাংলাদেশ বৈশ্বিক রপ্তানি বাণিজ্যে টিকে আছে। ম্যাগনেটস্কি অ্যাক্টর আওতায় যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, একজেক্টলি কেন তারা তা দিয়েছেন? কার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ তা আমরা জানতে চেয়েছি। সাধারণত ‘কথিত গুম, হিউম্যান রাইটস এবিউজ’ এর ঘটনা আছে জানিয়ে সচিব বলেন, এটা অন্যায়ভাবে করা হয়েছে। র‌্যাব বা অন্য বাহিনীর মধ্যে এসব ঘটনা রোধে এবং বিচারে যথেষ্ট ম্যাকানিজম বা ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনায় ১১ জনের এবং কক্সবাজারে সিনহা হত্যার বিচারের উদাহরণ টানেন। বলেন, আমরা বিশ্বের কাছে এই বার্তা দিতে চাই যে, কেউ বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। বিরোধী মত এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো যেভাবে লবিং করেছে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারেনি এমন অভিযোগ নাকচ করে সচিব বলেন, আমরা এটাকে মোটেও হালকাভাবে নেইনি। কমপ্লেইন আগেও ছিল। ইউপিআর এ নিয়ে যেসব সুপারিশ করেছে আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। কভার্ডভাবে কিছু এলে তো এন্টিসিপেইট করা মুশকিল। ৭০০ ইউরোপিয়ান এমপি আছে তাদের সবাইকে রিচ করা অসম্ভব উল্লেখ করে সচিব বলেন, একজন এমপিকে মিস লিড করা হয়েছে। তিনি যেভাবে চিঠি লিখেছেন তাতে মনে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার ওই এমপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জানিয়ে সচিব বলেন, অনেক দেশে আমাদের দূতাবাস নেই। তবে যিনি সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছেন তার কাছে আমরা সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি। যোগাযোগ করেছি।

Development by: webnewsdesign.com