বারবার চেয়েও কারো কাছ থেকে কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ির মালিকদের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, তালিকা আছে, কিন্তু বারবার চাওয়ার পর তো পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে এগুবো। যেগুলো পেয়েছি সেগুলোর ওপর কাজ করছি। বেগমপাড়ার কোনো তালিকা আমাদের কেউ দেয়নি। তিনি আরও বলেন, মানিলন্ডারিংয়ের তথ্য কোনো দেশ দিতে চায় না। কারণ টাকা সেই দেশে যাচ্ছে আর টাকাগুলো রাখার জন্যই তারা তথ্য দিচ্ছে না। বলছে, মামলা হলে তথ্য দেবে। কিন্তু মামলা করার জন্যই তথ্য দরকার। কোনো দেশই দিচ্ছে না। এই প্রতিকূলতা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
দুর্নীতির ধারণা সূচক নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো রিঅ্যাকশন নেই। এটা গ্রহণ করার বিষয় না, আবার প্রত্যাহারের বিষয়ও না। দেখেন এটা বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের একটা প্রতিবেদন। তারা একটা রিপোর্ট দিয়েছে, তাদের ক্রাইটেরিয়া আছে। আট প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ইনডেক্স থেকে কোট করে তারা এইটা করেছে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দুদক কাজ করছে জানিয়ে মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা করেই আমরা কাজ করছি। আমরা চাচ্ছি দুর্নীতি যেমন দমন হয়, দিন দিন যেন অবস্থার উন্নতি হয়। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। দুর্নীতির ব্যাপারে নমনীয় বা জিরো টলারেন্স এইটা দেখানোয় দুদকের কোনো সুযোগ নেই। এটার একমাত্র কাজ দুর্নীতি দমন। পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি আছে। মাত্রা কম-বেশি আছে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির ধারণাই পাল্টে যাচ্ছে। এ জন্য আমাদের প্রশিক্ষিত লোকবল দরকার।
প্রতিবেদনের তথ্য দুদক আমলে নেবে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এটা দেখবো যাচাই করে। যদি আমাদের কাজের কোনো সুপারিশ থাকে, সেগুলো বাস্তবসম্মত হলে ভবিষ্যতের উন্নতির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবো। কোন খাতে কেমন দুর্নীতি হয় এ বিষয়ে দুদকের কোনো গবেষণা আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের একটা রিসার্চ উইং আছে। কোভিডের জন্য দুই বছর যাবত আমাদের প্রতিরোধ কার্যক্রম একটু স্তিমিত হয়ে আছে। দুর্নীতি বন্ধে ২২টা মন্ত্রণালয়ে আমরা সুপারিশ করেছি। সেগুলো মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে কিনা সে এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা আমাদের নেই। সেটা তাদের বিষয়। দেশে দুর্নীতি বেড়েছে না কমেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি বাড়লো না কমলো বা দুর্নীতি কী জন্য এইটা আমরা বলবো না। আমাদের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ এলে সেটা অনুসন্ধান করে বিচারের আওতায় আনা হলো আমাদের কাজ। বিচারকার্যে সাহায্য করা। কোভিডের কারণে গত দুই বছর অভিযোগ কম এসেছে। তবে সেটা সরলীকরণ করা যাবে না।
Development by: webnewsdesign.com