টাকা ছাড়া সেবা মেলে না কাশিয়ানী ভূমি অফিসে

বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২২ | ১:১৩ অপরাহ্ণ

টাকা ছাড়া সেবা মেলে না কাশিয়ানী ভূমি অফিসে
apps

অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মো. সাহাবুদ্দিন মোল্যা। নামজারি করার জন্য তিনি এক বছর আগে উপজেলা ভূমি অফিসে চারটি ফাইল (মিউটেশন) জমা দেন। জমার ৬ মাস পর কাগজপত্রে ত্রুটির কারণ দেখিয়ে অফিস থেকে ফাইল ফেরত দেয়া হয়। ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে কাগজপত্র সঠিক করে পুনরায় সাহাবুদ্দিন মোল্যা উপজেলা ভূমি অফিসে ফাইল জমা দেন। এরপর শুরু হয় নানা অজুহাত ও দেন-দরবারের কথা। ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রুহুল আমিন ও অফিস সহকারী মো. আশিকুল ইসলাম চারটি ফাইলের জন্য অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনাসদস্যের কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। জমির নামজারি শেষ করে হজ পালন করতে যাবেন মো. সাহাবুদ্দিন মোল্যা। তাই দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে বাধ্য হয়ে সার্ভেয়ার রুহুল আমিনকে ১৮ হাজার টাকা ঘুষ দেন তিনি।

এরপর শুনানির জন্য তাকে অফিসে ডাকা হয়। এভাবে নানা হয়রানির পর গত ২ সপ্তাহ আগে তার জমির নামজারি সম্পন্ন হয়। শুধু সাহাবুদ্দিনই নয়, এমন অসংখ্য সেবাগ্রহীতা প্রতিদিন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা ভূমি অফিসে সার্ভে রিপোর্ট, ডিসিআর সংগ্রহ, মিসকেচ, খাজনা, দাখিলাসহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। একজনের জমি অন্যের নামে ডিসিআর, অন্যের দলিল দেখিয়ে সম্পত্তি নামে-বেনামে নামজারি ও কাঙ্ক্ষিত ঘুষ না পেয়ে ফাইল গায়েবের মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সহকারী কমিশনারের টেবিলে ফাইল পৌঁছাতে নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিতে হয় কয়েক দফা ঘুষ। ঘুষ না দিলে দিনের পর দিন ঘুরেও কাজ হয় না। নানা অজুহাতে হয়রানি করা হয় সেবাগ্রহীতাদের। জেলা প্রশাসক বরাবর ভুক্তভোগী মো. ফয়েজ আহম্মেদ নান্টুর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ‘বিগত ৩ বছর আগে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী তথ্য গোপন করে মিথ্যা ওয়ারিশন সনদপত্র জমা দিয়ে দু’টি জমির নামজারি করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ফয়েজ আহম্মেদ নামজারি দু’টি বাতিল/সংশোধনের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করেন। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। সংশোধনের জন্য অফিসের কর্মচারীরা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেয়ায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘুরছেন ভূমি অফিসে। তিনি অফিসে গেলে কর্মচারীরা খারাপ ব্যবহার করেন। এসব বিষয়ে সদ্য যোগদান করা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোরশেদুল আলম বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি, এসব বিষয় আমার জানা নেই। যার কারণে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’ গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘এসব বিষয় আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Development by: webnewsdesign.com