মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত চেয়ারে বসে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেছেন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরল সম্মানে ভূষিত করেছে সিলেট জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের আওতাধীন সকল থানায় স্থাপন করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ চেয়ার। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে ‘বীর চেয়ার’ নামে একটি চেয়ার সংরক্ষিত রাখা হয়েছে দেশের শ্রেষ্ঠসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য।

জেলার ১১টি থানায় সংরক্ষিত এই চেয়ার পাঠিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন। মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. লুৎফর রহমান সকল থানায় ‘বীর চেয়ার’ স্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা প্রশাসন এবং জেলা ও মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বক্তব্য দিয়ে মঞ্চে তার আসনে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে বসিয়ে তিনি নিচে নেমে আসেন। মহানগর পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ মঞ্চ ছেড়ে নিচে নেমে স্যালুট জানান মুক্তিযোদ্ধাদের। আর জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন ঘোষণা দেন সিলেটের সকল থানায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চেয়ার সংরক্ষিত রাখার।

পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের ঘোষণা অনুযায়ী জেলা পুলিশের আওতাধীন ১১টি থানায় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার আসন’ অঙ্কিত চেয়ার স্থাপন শুরু হয়। মঙ্গলবারের মধ্যে সকল থানায় এই চেয়ার স্থাপনের কাজ শেষ হয়। একই রকম চেয়ার স্থাপন হয়েছে পুলিশ সুপারের কক্ষেও। এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধারা কোনো কাজে থানায় বা পুলিশ সুপারের কাছে গেলে নির্দিষ্ট এই চেয়ারে বসবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মানও দেওয়া হবে তাদের।

পুলিশ সুপার কর্তৃক এই সম্মাননা ‘বীর চেয়ার’ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার খলিল উদ্দিন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি পুলিশ সুপারের এই সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন বিরল। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য থানায় চেয়ার সংরক্ষিত রাখার মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিলেটের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।’

সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, ‘মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাদের সম্মান জানানোর অর্থ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রকে সম্মান জানানো।’