সিলেট অফিস থেকে তানজিল ইসলাম
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বহুল প্রতীতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে (৫ ডিস্মেবর) বৃহস্পতিবার। একদিন আগেই সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে আওয়ামী লীগ। সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রস্তুত হয়েছে সম্মেলন মঞ্চও।
সিলেট নগরীর আলিয়া মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৫ সালের পর এবার সম্মেলন হচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগে। অন্যদিকে ২০১১ সালের নভেম্বরের পর এবার আসবে নতুন কমিটি। ফলে এবারের সম্মেলন নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে আগ্রহের পারদ বেশ তুঙ্গে। তবে সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ না করার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র। শেখ হাসিনার মতামতের ভিত্তিতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করতে পারেন।
নতুন নেতৃত্বে কারা আসতে পারে এ নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানান কথা। পুরনোদের পাশাপাশি নতুন অনেক নামও আলোচিত হচ্ছে। দুই কমিটির শীর্ষ দুটি করে মোট ৪ পদের জন্য অন্তত এক ডজন দৌড়ঝাঁপ করছেন। শহরজুড়ে বিলবোর্ড, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তারা প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন। পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে আছেন বিতর্কিত অনেকেও।
এদিকে, সম্মেলন যত ঘনিয়ে আসছিলো ততই আলোচনায় চলে আসছিলেন পুরনো নেতারা। পুরনোরাই আবার নেতৃত্বে থাকছেন কী না এ আলোচনা চলছিলো জোরেশোরেই। তবে প্রদপ্রত্যাশী সকলেই বলছেন, সবকিছুই নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। ভোট নয়, সমঝোতার মাধ্যমেই কমিটি হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
শীর্ষ পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি। আব্দুজ জহুর চৌধুরী সুফিয়ান মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লুৎফুর রহমান। দলের কার্যক্রমে ততটা সক্রিয় নন বলে অভিযোগ রয়েছে এই বয়োবৃদ্ধ নেতার বিরুদ্ধে। তিনি এবার সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে মনে করেছিলেন অনেকে। তবে তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড বলছে, তিনি ভারমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের আশা করছেন। প্রবীণ লুৎফুর রহমানের উপর দলীয় প্রধান ভরসা রাখলে সভাপতি পদের জন্য আলোচিত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে আবারও দেখা যেতে পারে সাধারণ সম্পাদক পদে। এই পদে তিনি বেশ সফল বলেই মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সার্বণিক রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি আছে শফিকের। একই সাথে দলের জন্য বারবার আত্মত্যাগ করে নেত্রীর গুড লিস্টেও রয়েছেন তিনি।
এমপিরা পদে আসতে পারবেন না এমন একটি ঘোষণা থাকায় সভাপতি পদে আলোচিত আরও দুই ব্যক্তি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির শীর্ষ পদে আসার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন দলটির নেতারা। তবে দলের হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ইমরান আহমদ চৌধুরীর শেষমুহূর্তে জোরেশোরে প্রচারণায় নামাও ভাবিয়ে তুলেছে তাদের। আরেক সহসভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদও এবার সভাপতি পদে প্রার্থী। তবে ছোটভাই আসাদ উদ্দিনের কারণে এবারও বঞ্চিত থাকতে হতে পারে তাকে।
শফিকুর রহমান চৌধুরী আবার সাধারণ সম্পাদক হলে আশার ফানুস চুপসে যাবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশি বর্তমান সহসভাপতি শাহ ফরিদ আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, নিজাম উদ্দিন ও সুজাত আলী রফিক, কোষাধ্য ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোশাহিদ আলী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রণজিৎ সরকার, উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরীর।
মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম দেখছেন অনেকে। গত সিটি নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় থাকলেও কামরান-আসাদকেই আবারো দেখা যেতে পারে নেতৃত্বে। তবে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে আগামীতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। সেটি সত্য হলে এই পদে নতুন কেউ আসতে পারেন।
এছাড়াও আলোচনায় আছেন সহসভাপতি এডভোকেট মফুর আলী, এডভোকেট রাজ উদ্দিন আহমদ ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালিক এবং যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার।
আসাদ উদ্দিন আহমদ সভাপতি হলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশির তালিকা অনেক লম্বা। নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও বিজিত চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল ও এটিএম হাসান জেবুল, শিা বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তপন মিত্র এবং বন ও পরিবেশ সম্পাদক জগদীশ চন্দ্র দাসের নামে আলোচনা আছে।
এ বিষয়ে এটিএম হাসান জেবুল বলেন, সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আমি প্রস্তুত আছি। যদি নেত্রী দেন, কাউন্সিলররা চায়, তবে আমি অবশ্যই দায়িত্ব নেব।
বিজিত চৌধুরী বলেন, আমি সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী। যদি নেত্রী দেন, তবে আমি দায়িত্ব নেব।
Development by: webnewsdesign.com