শিল্পীর নিপূন হাতের ছোঁয়ায় মুহুর্তে হয়ে উঠেছে দেবী দুর্গা

বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১ | ৪:৩৭ অপরাহ্ণ

শিল্পীর নিপূন হাতের ছোঁয়ায় মুহুর্তে হয়ে উঠেছে দেবী দুর্গা
apps

ষষ্ঠীপূজা দিয়ে আগামী ১১ অক্টোবর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাঘার প্রতিমা শিল্পীরা। এরই মধ্যে প্রতিটি মন্ডপে প্রতিমা নির্মাণ শেষ হয়েছে।

এখন শুধু রঙ তুলির আঁচড়ে দুর্গতিনাশিনীর রূপ ফুটিয়ে তোলার অপেক্ষা। সব মিলিয়ে প্রতিমা শিল্পীদের এখন দম ফেলার সময় নেই। দেবী দুর্গার আগমনী বার্তায় উৎসবের প্রস্তুতি এখন ঘরে ঘরে। সোনার গহনা ও পরিধেয় বস্ত্র কেনা কাটা ছাড়াও চলছে নাড়ু তৈরির ধুম। এবার উপজেলায় ৪৪ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

এর মধ্যে বাঘা পৌর শহরে ১০টি ও আড়ানি পৌর শহরে পূজা হবে ১৩টি মন্ডপে। ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ১১ই অক্টোবর। এদিন মন্ডপ থেকে মন্ডপে বেজে ওঠবে ঢাকঢোলের বাজনা আর কাঁসার করুণ সুর। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে পাঁচ দিনের উৎসব শেষ হবে আগামী ১৫ই অক্টোবর। গতবছর উপজেলায় ৩৯ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়াসহ কয়েকটি মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা প্রতিমা তৈরির অধিকাংশ কাজ শেষ, এখন চলছে রঙ তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমার রূপ যৌবনা ফিরিয়ে আনার কাজ। প্রতিমা শিল্পী আনন্দ মালাকার (৬০) বলেন, তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন।

তার বাবা-দাদাও প্রতিমা তৈরি করতেন। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রভাব বেশি থাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল না। এবার বাজেটও বেশি, কাজও শেষের দিকে।’ এবছর তিনি ৩৫ টি প্রতিমা তৈরির অগ্রিম টাকা (বায়না) নিয়েছেন। আড়ানি পৌর এলাকার আরেক প্রতিমা শিল্পী মিলন পাল (৪৮) বলেন, নদী থেকে কাদা মাটি কিনে এনে প্রতিমা তৈরি করতে হয়।

তারপর কাঠ, সুতা, খড়, রং, কাপড় ও মুকুট দিয়ে এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে পাঁচ দিন। কিন্ত জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওযায় প্রতিমা সেট বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না। প্রকারভেদে প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বাঘা শাখার সাধারন সম্পাদক অপূর্ব কুমার সাহা বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর জাঁকজমক বেশি করার চেষ্টা করছি।’স্বাস্থ বিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসবে যোগ দিতে সকল মন্দির কমিটির নেতাদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বাঘা শাখার সভাপতি সুজিত কুমার পান্ডে বাকু বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারির কারনে গত বছর তেমন কোন উৎসব ছিলনা।

এবার পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে। সব পূজামন্ডপে যাতে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে। এদিকে উৎসবকে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে আজ সোমবার (০৪-১০-২০২১) উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহি অফিসার পাপিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড: লায়েব উদ্দিন লাভলু, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলসহ পূজা উৎযাপন কমিটির নের্তৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন,শারদীয় দুর্গাপূজা কেবল হিন্দু সদায়েরই নয়,সমগ্র বাঙালির একটি সার্বজনীন উৎসব। তাই উৎসবকে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশষে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com