রাজধানীর অভিজাত পাঁচ তারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানের বারে (১৫তলা) সংগীত এবং নৃত্যের নামে চলছে অবৈধ মাদকের রমরমা ব্যবসা। স্থানীয় খিলক্ষেত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ব্যবহার করে ওই বারের পার্টি আয়োজক আবুল বাশার অবৈধ মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে উঠতি বয়সী শিল্পী এবং নৃত্যশিল্পীদের বিকৃত যৌনাচারেও বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বাশারের বিরুদ্ধে ‘প’ অধ্যাক্ষরের একজন ড্যান্সার যার বাড়ি কুমিল্লা তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই আবুল বাশার আমাকে দিয়ে জোর করে কয়েকজনের সঙ্গে যৌনকাজে বাধ্য করেছে। এ নিয়ে আমি বিচার চাইতে গেলে বারবার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমি এখনো নিরপত্তাহীনতায় ভুগছি। পুলিশের কাছে এসব বিষয়ে অভিযোগ করলে বাশার এবং তার লোকজন আমাকে মেরে ফেলবে এমন হুমকিও দিয়েছে।’
নারায়াণগঞ্জের ‘ম’ অধ্যাক্ষরের একজন গায়িকা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি লা মেরিডিয়ান হোটেলের ১৫ তলার বারের একটি গোপন কক্ষে নিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। তখন চিৎকার চেঁচামেচির পর লাঞ্ছিত হয়ে কোনো রকমে বের হয়ে আসেন।
এছাড়া সরেজমিনে ঘুরে লা মেরিডিয়ান হোটেলের ১৫ তলার বারের পোগন কক্ষে নিষিদ্ধ মাদক আইস, কোকেন, হিরোইন, ইয়াবা সেবন করা হয়। সেখানে নিয়মিত আড্ডা দেন সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা থেকে শুরু করে উঠতি বয়সী ধনীর ছেলে। এমনকি ১৬ তলায়ও আবুল বাশারের সহযোগী হিসাবে ডিজিটাল শাহেদ ওরফে ফেনসি শাহেদ, জসিম ওরফে ইয়াবা জসিম এসব অপকর্মে জড়িত। এ সকল অপকর্মের অন্যতম মূল হোতা হিসাবে বাশারের সঙ্গে কাজ করেন বার ম্যানেজার মোস্তফা, বার টেন্ডার কিশোর।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, এই হোটেলের ১৬ তলায় আরো একটি কক্ষে নিয়মিত ককটেল পার্টি, ভাই-ব্রাদার পার্টি, জি.পি (গ্রুপ সেক্স) পার্টি, প্রিমিয়াম পার্টির নামে বিভিন্ন পার্টির আয়োজন করা হয়। যেখানে কম বয়সী মেয়েদের জোরপূর্বক অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করা হয়। অভাবের কারণে এই বারে কাজ করতে আসলে তাদের ব্যবহার করে অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছে বাশার সিন্ডিকেট।
এসব অভিযোগের বিষয়ে লা মেরিডিয়ান হোটেলের পরিচালক নিরবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি আপনার কথাগুলো শুনলাম। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মার্কেটিং বিভাগের লোকজন যারা গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন, তাদের কাছে আপনার নম্বর দিয়ে দিচ্ছি। তারাই আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
এদিকে, অভিযুক্ত ডিজে বাশারকে গতকাল রাতে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি নিউজে বক্তব্য চেয়ে তাকে ক্ষুদেবার্তা (এসএমএস) পাঠালে তিনি বুধবার দুপুরে কলব্যাক করেন। তখন বাশার বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে কেউ দিতে পারে। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে নিউজ না করার অনুরোধ করে তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে দেখা করতে চান এবং লা মেরিডিয়ান হোটেলে তার আথিতেয়তা গ্রহণের অনুরোধ করেন। এমনকি ডিজিটাল শাহেদও এ প্রতিবেদককে ফোন করেন।
সূত্র: দৈনিক ভোরের পাতা
Development by: webnewsdesign.com