রাজশাহীতে চলছে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি

শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০ | ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে চলছে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
apps

এবার রাজশাহীতে ৪২০টি মণ্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রাজশাহী মহানগরীতেই ৬৭ থেকে ৭০টি পূজা মণ্ডপ হবে। এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে এখন ব্যস্ততা বেড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের।

রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি এলাকায় কার্তিক চন্দ্র পাল ও গণেশ কুমার পালের কারখানার শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। সবাই ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাঁদামাটির প্রলেপ লাগাতে। আর ক’দিন পর এসব প্রতিমার গায়ে রঙ-তুলির আঁচড় পড়বে বলে জানান শিল্পীরা।

ঋষি কান্ত পালের ছেলে প্রতিমা শিল্পী কার্তিক চন্দ্র পাল। ২৫ বছর বয়সের কার্তিক ১৪ বছর বয়স থেকেই এ পেশায় জড়িত। তিনি জানালেন, পঞ্চমির রাতের আগেই তাদের প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। একটি প্রতিমা তৈরিতে শিল্পীদের ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। রাজশাহীতে একেকটি প্রতিমা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

জানা গেছে, রাজশাহীতে প্রায় ৯৫ জন কারিগর এবার মণ্ডপে প্রতিমা সরবরাহ করবেন। তাই একেকজন কারিগরকে তিন থেকে পাঁচটি প্রতিমা তৈরির কাজ করতে হচ্ছে।

রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, ৬০ বছরের বয়বৃদ্ধ নিশিকান্ত পাল তার দলবল নিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে আছেন। তার সঙ্গে রয়েছে রাজকুমার পাল, গৌরপাল, উজ্জল পাল, ময়না পাল ও শিল্পি পাল। নিশিকান্ত জানান, তারা বংশ পরমপরায় এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।

উজ্জল পাল জানান, তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা এবং রাজশাহীর প্রায় প্রতিটি থানা এবং মহানগর থেকে অর্ডার পেয়েছেন। তারা নির্বিঘ্নে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন।

এদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ নেওয়াজ।

গোদাগাড়ী উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শান্ত কুমার মজুমদার বলেন, ‘এবার গোদাগাড়ী উপজেলায় ৩৯টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় জানানো হয়, পূজা চলাকালীন সময়ে মণ্ডপের আশেপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, ‘আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। এ জন্য প্রতিটি মণ্ডপে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে।

তিনি জানান, মিহামারির কারণে এবার পূজায় থাকছে না কোনো আড়ম্বর। উৎসবের অনুসঙ্গ বাদ দেয়ার পাশাপাশি মহামারি থেকে মুক্তি পেতে অসুরবিনাশী দেবীর প্রতি প্রার্থনা করবেন ভক্তরা।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, ‘দুর্গা পূজা উপলক্ষে রাজশাহীর সব পূজা মণ্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মণ্ডপগুলোতে পুলিশ ও র‌্যব সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে থাকবেন গোয়েন্দারা। মণ্ডপ এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ যেন কোনও ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য সবসময় তৎপর থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘পূজা মণ্ডপে আনসারদের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। এছাড়া ভ্রাম্যামাণ কয়েকটি দল মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরবে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

Development by: webnewsdesign.com